ধামাখালিতে শাহজাহানের এই মাছের আড়ত ৫ জানুয়ারির পর থেকে বন্ধ। নিজস্ব চিত্র ।
সন্দেশখালির মুকুটহীন সম্রাট শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হয়েছেন গত বৃহস্পতিবার। তার আগে প্রায় মাস দু’য়েক ‘গা ঢাকা’ দিয়ে ছিলেন। কিন্তু সন্দেশখালির দু’টি ব্লক জুড়ে বিস্তৃত শাহজাহানের ইটভাটা, মাছের ভেড়ির ব্যবসায় ভাটা পড়েনি এতটুকু। সূত্রের খবর, শাহজাহানের এক একটি ব্যবসা এক এক জন ঘনিষ্ঠ দেখভাল করছেন। তবে নেতার গ্রেফতারির পরে কদ্দিন কারবার ঠিকঠাক চলবে, সে প্রশ্ন উঠছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সন্দেশখালি ১ ব্লকের তৃণমূলের এক জেলা পরিষদের সদস্য শাহজাহানের মাছের আড়তগুলি দেখভাল করছেন। ন্যাজাট থানার আখড়াতলা, মালঞ্চ পুরনো বাজার, সরবেড়িয়ায় শহজাহানের মাছের আড়ত রয়েছে। এ ছাড়া, সন্দেশখালি থানার ধামাখালিতেও মাছের আড়ত আছে। ধামাখালি থেকে সরবেড়িয়ার মধ্যে ও আশপাশের এলাকায় কয়েকশো বিঘা মাছের ভেড়ি আছে শাহজাহানের। ধামাখালি ও ন্যাজাট থানা এলাকায় একাধিক ইট ভাটা আছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এগুলি দেখভাল করছেন শাহজাহান ঘনিষ্ঠ সন্দেশখালি ১ ব্লকের তৃণমূলের এক কর্মাধ্যক্ষ।
শাহজাহান ঘনিষ্ঠদের দাবি, ধামাখালি খেয়াঘাটের পাশে একটি আড়ত বন্ধ রয়েছে। তবে বাকি আড়ত দিব্যি চলছে। ধামাখালি এলাকায় থাকা ইট ভাটা-সহ সব ইট ভাটাগুলিও চালু আছে। অভিযোগ, শাহজাহান সন্দেশখালি এলাকার মাছের ভেড়ির মালিকদের ছলে-বলে-কৌশলে সমস্ত মাছ নিজের আড়তে, নিজের নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে বাধ্য করতেন।
আবার কোনও কোনও ভেড়ি মালিককে অগ্রিম মোটা টাকা দিয়ে রাখতেন। মাছ আড়তে নিয়ে এলে তখন টাকা কেটে নিতেন। তবে গ্রেফতারের পরে কত দিন শাহজাহানের ভয়ে ভেড়ি মালিকেরা তাঁর আড়তে মাছ বিক্রি করবেন, সেটাই এখন প্রশ্ন। শাহজাহানের সঙ্গে মাছের ব্যবসা করা ব্যবসায়ীদের বাড়িতেও হানা দিয়েছিল ইডি। সব মিলিয়ে শাহজাহানের ব্যবসা আপাতত ঠিকঠাক চললেও, কত দিন এমন থাকবে, সে প্রশ্ন উঠছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের সন্দেশখালি ২ ব্লকের এক নেতা বলেন, “দাপটের সঙ্গেই শাহজাহান ভাই বসিরহাট আদালতে ঢুকলেন। যদি বেশি দিন জেলে থাকতে না হয়, দ্রুত জামিন পান, তা হলে সাম্রাজ্য অনেকটা ধরে রাখতে পারবেন। না হলে কিন্তু সব তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।”