নজরদারি: এলাকা শান্ত করতে টহল দিচ্ছে পুলিশ। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুলি ও বোমাবাজির অভিযোগ উঠল। সোমবার ক্যানিংয়ের গোলাবাড়ি বাজারের ওই ঘটনায় এক পুলিশকর্মী- সহ মোট পাঁচজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি দোকান ও বাড়ির পাশাপাশি যুব তৃণমূল কার্যালয়েও ভাঙচুর চালনো হয়েছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে বারুইপুর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর নেতৃত্বে পুলিশি টহলদারি শুরু করেছে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, গোলাবাড়ি এলাকার যুব তৃণমূল কর্মী ইন্দ্রজিৎ সর্দারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ রয়েছে ইটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান খতিব সর্দারের। প্রায়ই দু’পক্ষের মধ্যে ছোটখাটো ঝামেলা লেগেই থাকে। রবিবার ক্যানিংয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ে সভা ছিল। ওই সভার আয়োজক ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কোর্ডিনেটর পরেশরাম দাস। শাসক দলের অন্দরের সমীকরণে পরেশের বিপরীতে রয়েছেন ক্যানিং ১ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি শৈবাল লাহিড়ি। বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলও রয়েছেন শৈবালের গোষ্ঠীতে। রবিবারের সভায় দেখা যায়নি শৈবাল ও শ্যামলকে। স্থানীয় সূত্রের খবর, খতিব রয়েছেন শৈবালের গোষ্ঠীতে। আর ইন্দ্রজিৎ পরেশের অনুগামী। রবিবারের সভায় গোলাবাড়ি থেকে যোগ দিয়েছিলেন এলাকার যুব তৃণমূল কর্মীরা। অভিযোগ, কেন সভায় গিয়েছিলেন, এই প্রশ্ন তুলে এ দিন যুব তৃণমূল কর্মীদের মারধর করা হয়। বেছে বেছে যুব তৃণমূল কর্মীদের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ, খতিবের নেতৃত্বে এই হামলা হয়েছে। ইন্দ্রজিৎ বলেন, ‘‘রবিবার বিকেলে ক্যানিংয়ে যুব তৃণমূলের সভায় যোগ দেওয়ার কারণেই সোমবার সকালে গোলাবাড়ি বাজারের উপরেই আমাদের যুব তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালনো হয়েছে। এরা যুব তৃণমূল দল করে বলেই এই হামলা চালিয়েছে খতিব ও তার অনুগামীরা।’’ যদিও খতিব এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘ইন্দ্রজিৎ ও তার অনুগামীরাই আমাদের কর্মীদের উপর এদিন হামলা চালিয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিনের ঘটনায় নিমাই মণ্ডল, মিঠু রায়, পিন্টু মাঝি, রবিন বৈদ্য নামে চার যুব তৃণমূল কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ছাড়াও দু’পক্ষের আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। গোলমাল থামাতে গিয়ে ইটের আঘাতে আহত হয়েছেন ক্যানিং থানার এক এস আই ইন্দ্রজিৎ ভক্ত। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বলেন, ‘‘সোমবার সকালে গোলাবাড়ি বাজারে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। ছয় জনকে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে। কী কারণে গন্ডগোল, এর পিছনে কারা জড়িত সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।’’ এ বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের কোর্ডিনেটর পরেশরাম বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক বিবাদ নয়। ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নিক।’’