মসজিদের পথে তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর। —নিজস্ব চিত্র।
সোমবার সকালে জয়নগরের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন মসজিদ যাবেন বলে। নমাজ পড়তে যাওয়ার পথেই গুলিবিদ্ধ হন সইফুদ্দিন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগে মৃত্যু হয় তাঁর। কী ভাবে খুন হয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেতা, তার সিসিটিভি ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ। তাতে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল নেতা ধীরেসুস্থে হাঁটছেন রাস্তা দিয়ে। আচমকা তাঁর পাশ ঘেঁষে দুটো মোটরবাইক এসে দাঁড়ায়। তার পরের দৃশ্য দেখা যায়নি। তবে বেশ কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দাকে ছুটে আসতে দেখা যায়। তার পরেই মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল নেতার। এই ফুটেজের মাধ্যমে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। তার মধ্যে আদালত থেকে পুলিশের গাড়িতে ওঠার সময় ধৃত শাহরুল শেখ দাবি করেছেন, তিনি গুলি চালাননি। তৃণমূল নেতাকে গুলি করেছেন অন্য কেউ।
বস্তুত, জয়নগরের ‘প্রভাবশালী’ তৃণমূল নেতা খুনে যে ভাড়াটে খুনি রয়েছে, তা আগেই আন্দাজ করেছে পুলিশ। আততায়ীদের গুলি করার দিন, ক্ষণ এবং অপারেশনের ধরন দেখে তদন্তকারীরা বুঝে যান, খুনের নেপথ্যে কোনও ‘পাকা মাথা’ রয়েছে। এ-ও জানা যায়, ওই খুনে এক লক্ষ টাকা সুপারি দেওয়া হয়েছিল। সেই ভাড়াটে খুনিদের খোঁজ চলছে। এখনও পর্যন্ত তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় দু’জনের হদিস পাওয়া যায়নি বলে জানাচ্ছে পুলিশ। শাহরুল নামে যে অভিযুক্তকে মঙ্গলবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়, তিনি পুলিশের গাড়িতে ওঠার সময় বলেন, ‘‘বড় ভাই নাসির টিপ দিয়েছিল।’’ কিন্তু সেই নাসির কে, কার দাদা, তা বলেননি অভিযুক্ত। ‘‘গুলি আমি চালাইনি... গুলি আমি চালাইনি’’— এটাই বার বার বিড়বিড় করতে করতে পুলিশ ভ্যানে ওঠেন শাহরুল।
পুলিশ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত জয়নগরকাণ্ডে মোট তিনটি মামলা রুজু করা হয়েছে। একটি তৃণমূল নেতার খুন, দ্বিতীয়টি পিটিয়ে মারার ঘটনা এবং তিন নম্বর হল এলাকার কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে। অন্য দিকে, তৃণমূল নেতার খুনের পরে সাহাবুদ্দিন নামে যাকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে, তাঁর বাড়ি জয়নগরের গোদাবর এলাকায়। সাহাবুদ্দিন দর্জির কাজ করতেন। শাহরুলও অন্য সময়ে সেলাই-ফোঁড়াইয়ের কাজ করতেন। সেই সূত্রেই দু’জনের মধ্যে আলাপ।