ভিকি যাদব। —ফাইল চিত্র।
গত মঙ্গলবারই দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হয়েছেন ‘তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ভিকি যাদব। তা নিয়ে রাজনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে তাঁর বাড়িতে গেল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় নাম ছিল ভিকির। একটি খুনের মামলায় কিছু বিষয় জানতেই তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশ হয় ওই বছর ২ মে। ওই দিনই উত্তর ২৪ পরগনার জগদ্দলে আকাশ যাদব নামে এক যুবক খুন হন। সেই খুনের মামলায় ভিকি অন্যতম সাক্ষী ছিলেন। সিবিআই সূত্রে খবর, ভিকির মৃত্যুতে ওই মামলার তদন্ত প্রভাবিত হতে পারে। কারণ, এখনও ভিকির কাছ থেকে অনেক কিছুই জানার ছিল তদন্তকারীদের। সে ব্যাপারে পরিবারের লোকেরা অবগত কি না, তা জানতেই ভিকির বাড়িতে যাওয়া হয়েছে বলে দাবি তদন্তকারীদের একটি সূত্রের।
মঙ্গলবার বাড়ির উঠোনে গরুকে বিচালি খাওয়াচ্ছিলেন ভিকি। সেই সময় একটি বাইকে করে তাঁর বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় তিন জন। জিজ্ঞাসা করা হয়, ভিকি কার নাম? ভিকি নিজের পরিচয় বলার সঙ্গে সঙ্গেই এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে তারা। বাড়ির দরজার সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ওই যুবক। পরিবারের দাবি, ভিকির সারা শরীরে মোট ন’টি গুলি লেগেছে। সব মিলিয়ে মোট ১১ রাউন্ড গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় প্রথমে ভাটপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল ভিকিকে। কিন্তু শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাস্তাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। সিবিআই সূত্রে খবর, আকাশের মৃত্যুর সঙ্গে ভিকির খুনের কোনও সম্পর্ক আছে কি না, সে ব্যাপারেও খোঁজ করতে চাইছেন গোয়েন্দারা।
তৃণমূল এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিকির বাবা ছিলেন এক পুলিশকর্মী খুনের মামলার অন্যতম আসামি। তিনিও খুন হয়েছিলেন। ভিকির কাকারও মৃত্যু ‘পুলিশি এনকাউন্টারে’ হয়েছিল বলে দাবি। শাসকদলের নেতারা প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু না বললেও, ঘরোয়া আলোচনায় স্পষ্টই বলছেন, দলের কর্মী হলেও, ভিকি আসলে সমাজবিরোধী বৃত্তেই বড় হয়েছেন। সেই অংশের সঙ্গে তাঁর মেলামেশাও ছিল নিবিড়। পুলিশের একাংশের মত, ভিকির খুনের নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ যতটা না রয়েছে, তার চেয়ে বেশি স্পষ্ট হচ্ছে ব্যক্তিগত আক্রোশের বিষয়টি। এক পুলিশ আধিকারিকের কথায়, ‘‘রাগ না থাকলে কেউ ১১ রাউন্ড গুলি চালায়!’’