সিদ্ধান্ত: ভিড় বাজারে। মঙ্গলবার মাইকে চলছে প্রচার। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক দিনে ক্যানিং এলাকায় যথেষ্ট পরিমাণ বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের তালিকা। সে কারণেই করোনা সংক্রমণে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে উদ্যোগ করেছে ক্যানিং বাজার ব্যবসায়ী সমিতি। সরকারি ভাবে এই এলাকায় কন্টেনমেন্ট জ়োনের আওতায় না থাকলেও ক্যানিং বাজার ও সংলগ্ন এলাকায় আগামী এক সপ্তাহ সম্পূর্ণ লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নিল এই ব্যবসায়ী সংগঠন। ওষুধের দোকান ছাড়া সমস্ত দোকান এবং এই এলাকায় ব্যাঙ্ক-সহ অন্যান্য অফিস-কাছারি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম বড় বাজার এই ক্যানিং বাজার। মহকুমার সমস্ত ব্লকের মানুষজন যেমন এই বাজারে আসেন, তেমনই বারুইপুর মহকুমার কুলতলি, ভাঙড় এলাকার বহু মানুষও প্রতিদিন এই বাজারে আসেন।
মার্চের শেষ সপ্তাহে দেশ জুড়ে লকডাউন শুরু হলেও ক্যানিং বাজারে সেই লকডাউনের তেমন প্রভাব পড়েনি। কিছু কিছু দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বেশিরভাগ দোকানপাটই দুপুর পর্যন্ত খোলা থাকছিল। তাই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই মানুষজন দেদার এসেছেন এই বাজারে লকডাউনেও। সে সময়ে ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে সে ভাবে বাজার বন্ধের জন্য উদ্যোগ করা হয়নি।
তবে এ বার তাদের টনক নড়েছে। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ক্যানিং বাজার মাতলা ১ পঞ্চায়েতের মধ্যে অবস্থিত হলেও বাজার সংলগ্ন এলাকা মাতলা ২ ও দিঘিরপাড় পঞ্চায়েত এলাকা জুড়ে রয়েছে। সে কারণে এই তিন পঞ্চায়েতের সঙ্গে যৌথ ভাবে বৈঠক করে ব্যবসায়ী সমিতি। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বুধবার ১৫ জুলাই বিকেল থেকে আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ক্যানিং বাজার। এ বিষয়ে মঙ্গলবার সকাল থেকেই বাজারে মাইকে প্রচার করা হয়েছে ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে। সমিতির যুগ্ম সম্পাদক হরি নারায়ণ খাঁড়া বলেন, ‘‘গত কয়েক দিনে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয়েছে। ক্যানিং বাজার ও শহর লাগোয়া এলাকায় করোনা সংক্রমণ হয়েছে। ক্যানিং বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী আক্রান্ত হয়েছেন। যাতে এই সংক্রমণ প্রতিহত করা যায়, সে কারণেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ মাতলা ১ পঞ্চায়েত প্রধান হরেন ঘোরুই বলেন, ‘‘এই বাজারে দূরদূরান্তের মানুষজন কেনাবেচা করতে আসেন। এখন যে ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে, তাকে প্রতিহত করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারি ভাবে এই এলাকাকে কন্টেনমেন্ট জ়োন হিসেবে ঘোষণা করা না হলেও পঞ্চায়েত ও ব্যবসায়ী সমিতি একত্রিত হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এলাকার মানুষের স্বার্থে।’’
এই বাজার লাগোয়া রয়েছে জেলার অন্যতম বড় মাছের আড়ত। ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকে আড়ত বন্ধ রাখার জন্য ক্যানিং মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতিকে আবেদন জানানো হয়েছে। ক্যানিং মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী সমিতির তরফ থেকেও এই লকডাউনকে সমর্থন জানানো হয়েছে। তবে আড়ত আগামী ১৭ জুলাই থেকে ২৩ জুলাই বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। সমিতির সদস্য কল্যাণ দাস বলেন, ‘‘সংক্রমণ রুখতে আমরা ব্যবসায়ী সমিতির লকডাউনকে সমর্থন করছি। তবে মৎস্যজীবীরা সকলেই নদীতে মাছ, কাঁকড়া ধরছেন। তাঁদের আড়ত বন্ধের বার্তা দিতে দু’দিন পর থেকে লকডাউন শুরু হবে আড়তে।’’