ঠাকুরনগরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। — নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে তরজা শুরু হয়ে গেল রাজ্যে। উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে গিয়ে এ বার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানালেন, প্রতিশ্রুতি মতো রাজ্যে সিএএ কার্যকর হবেই। মতুয়াদের আশ্বস্ত করে তিনি জানান, রাজ্যে সিএএ চালু হওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
শুভেন্দুর এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে পাল্টা কটাক্ষ করেছে তৃণমূলও। বনগাঁর প্রাক্তন সাংসদ তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে নাগরিকত্বের যে নথি রয়েছে, মতুয়াদের কাছেও একই নথি রয়েছে। তা হলে আবার কেন নতুন করে নিজেদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে মতুয়াদের?’’
শনিবার ঠাকুরনগরে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) নিয়ে একটি জনসভায় যোগ দেন শুভেন্দু। তার আগে ঠাকুরবাড়িতে এসে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দেন বিজেপি বিধায়ক। একান্তে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে। এর পরেই ঠাকুরনগর রেল ময়দানের মঞ্চ থেকে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘যেমন কথা, তেমন কাজ। সিএএ আইন পাশ হয়েছে। আগামী দিনে এ রাজ্যে সিএএ চালু হবেই। দম থাকলে তা আটকে দেখাক।’’
এ রাজ্যে সিএএ কার্যকর করতে দেওয়া হবে না বলেই প্রথম থেকেই জানিয়ে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রসঙ্গ টেনেও শুভেন্দু বলেন, ‘‘সিএএ বিরোধী আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘুদের উস্কে দিয়েছিলেন নিজের স্বার্থে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অপেক্ষায় রয়েছে কেন্দ্র। সেই রায় বার হওয়ার পরেই রুল তৈরি হবে। সিএএ কার্যকর হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না। ওটা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা।’’
ভোট মেটার পরেও সিএএ কার্যকর না হওয়ায় মতুয়াদের মধ্যে যে ‘ক্ষোভ’ তৈরি হয়েছে, তা কারও অজানা নয়। শান্তনুও যে এ বিষয়টায় খুব একটা ‘সন্তুষ্ট’ নন, তা বেশ কয়েক বার তাঁর কার্যকলাপেই প্রকাশ পেয়েছে। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কখনওই সে কথা প্রকাশ্যে বলেননি। ‘চাপা অসন্তোষ’ যে রয়েছে, তা মেনে নেন শান্তনু ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতারাও। এই পরিস্থিতিতে শনিবার সকলকেই ‘আশ্বস্ত’ করতে দেখা গেল শুভেন্দুকে। মতুয়াদের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘সিএএ আইনে কারও নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কথা বলা হয়নি। যাঁরা ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, পাকিস্তান থেকে এসেছেন তাঁদের নাগরিকত্ব দিতে সহযোগিতা করবে। ভিসা চাইতে গেলে, চাকরি চাইতে গেলে পুলিশ আর আপনাদের হেনস্থা করবে না। সমানাধিকার দিতে এই সিএএ।’’
পাল্টা মমতাবালা বলেন, ‘‘২০১৯ সাল থেকে শুনছি মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। যখনই কেন্দ্রের কোনও মন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে আসেন, একই কথা বলেন। কিন্তু কবে তা দেওয়া হবে, সেটাই তো বুঝতে পারছি না।’’