বিকল্প: ফ্লাড শেল্টারে চলছে ক্লাস। নিজস্ব চিত্র
বুলবুলে উড়ে গিয়েছিল স্কুল ভবনের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি। ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও এখনও সুরাহা হয়নি। বাধ্য হয়ে পাশের ফ্লাড শেল্টারে চলছে পঠন পাঠন। এই ছবি সাগরের হরিণবাড়ি যুধিষ্ঠির আদর্শ শিক্ষায়তনের। স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ওই স্কুলে পাশাপাশি তিনটি ভবন রয়েছে। তার মধ্যে একটি দোতলা ও একটি তিন তলা ভবন। বর্তমানে ওই স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ৮৫৩ জন। ছাত্রছাত্রীর তুলনায় শ্রেণিকক্ষ কম থাকায় তিন তলা ভবনের উপরে অ্যাসবেস্টসের ছাউনি দেওয়া চারটি শ্রেণিকক্ষ তৈরি হয়।
নভেম্বরে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বুলবুলের জেরে চারটি ঘরের ছাউনিই ভেঙে তছনছ হয়ে যায়। ফলে ওই চারটি ঘরে আর পঠন-পাঠনের কাজ চালানো যাচ্ছে না। বাধ্য হয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ পাশেই ফ্লাড শেল্টারে ক্লাস করাচ্ছেন। অভিযোগ, ফ্লাড শেল্টারের চারদিকে দরজা জানালার জায়গাগুলি ফাঁকা। শীতকালে সেখান দিয়ে ঠান্ডা হাওয়া ঢুকছে। কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই ক্লাস করতে হচ্ছে। ওই শেল্টার জুড়ে আবর্জনার স্তূপ পড়ে রয়েছে বলেও অভিযোগ। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শ্রেণিকক্ষের সঙ্কটের পাশাপাশি সমস্যা রয়েছে পানীয় জলের। নেই নলকূপ, খেলার মাঠ, সাইকেল রাখার শেড। এমনকী, ছাত্রছাত্রীর তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকার সংখ্যাও যথেষ্ট কম। ফলে পঠনপাঠন ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক দেশবন্ধু দাস বলেন, ‘‘এত সমস্যার মধ্যেও আমরা ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি। বিপত্তি হয়েছে বুলবুলের ঝড়ে তিন তলা শ্রেণিকক্ষের ছাদ উড়ে যাওয়ায়। বাধ্য হয়ে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ফ্লাড শেল্টারের মধ্যে ক্লাস নিতে হচ্ছে। শিক্ষা দফতর থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে গোটা বিষয়টা জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’ তিনি জানান, স্কুলে উচ্চমাধ্যমিকের মূল সেন্টার হয়। এ বার পরীক্ষা শুরু হবে ১২ মার্চ। তার আগে তিন তলা ভবনের উড়ে যাওয়া ছাউনি সংস্কার না করতে পারলে সমস্যায় পড়তে হবে। সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই স্কুলের সমস্যা আমি শুনেছি। তা জেলা স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের পঠনপাঠনের জন্য পাশের ফ্লাড শেল্টারে ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে পড়াতে গিয়ে কোনও সমস্যা থাকলে আমি পঞ্চায়েতকে বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি আমাকে কেউ জানাযননি। যে সমস্ত স্কুল বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে এই স্কুলটি আছে কিনা জানি না। আমি দ্রুত খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’’