খারাপ হয়ে রয়েছে বকখালির রাস্তার ত্রিফলা আলো। নিজস্ব চিত্র
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা—মাঝে মধ্যেই লোডশেডিং হয়ে যায় এলাকায়। রয়েছে লো-ভোল্টেজেরও সমস্যা। ফলে পর্যটক থেকে বাসিন্দারা তিতিবিরক্ত হয়ে যান। বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে বকখালি পিকনিক স্পটের কাছাকাছি বিদ্যুতের সাব স্টেশনের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বকখালি পিকনিক স্পটের কাছাকাছি বিদ্যুৎ দফতরের কোনও সাব স্টেশন নেই। প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে রাধানগর সাব স্টেশন থেকে ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টালের বকখালি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। বিদ্যুতের যা চাহিদা, তার থেকে সরবরাহ কম হওয়ায় মাঝেমধ্যেই লো ভোল্টেজ হয়। হয় লোডশেডিংয়ও। অথচ বকখালি ও ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৮০টি পর্যটকদের থাকার হোটেল রয়েছে। হোটেলে কমবেশি এসি ঘর রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ লোডশেডিং থাকলে বা লো-ভোল্টেজ হলে এসি ঘরগুলি বন্ধ রাখতে হয়। শুধু তাই নয়, রাস্তাতে আলোর ব্যবস্থা থাকলেও লোডশেডিংয়ের জেরে তা জ্বলে না। ফলে রাস্তায় ঘুরতে বেরিয়ে মানুষকে বিপদে পড়তে হয়। বকখালি থেকে হেনরি আইল্যান্ড পর্যন্ত এই সমস্যা হয়। ফ্রেজারগঞ্জের সমুদ্রে যাতায়েতের জন্য রাস্তায় কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। এমনকী দাসকর্নার থেকে সমুদ্র বাঁধের উপরেও কোনও আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর পর্যটকেরা ওই বাঁধের দিকে বেড়াতে যেতে পারেন না। বকখালি ঢোকার মুখে ফ্রেজারগঞ্জ মোড় থেকে বকখালি পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তার এক ধারে ত্রিফলা আলো লাগানো হয়েছিল। বুলবুলের দাপটে তা ভেঙে পড়ে অকেজো হয়ে রয়েছে। ফলে সন্ধ্যার পর সারা রাস্তা অন্ধকারে ডুবে থাকে।
ফ্রেজারগঞ্জ এলাকায় রয়েছে সরকারি বেসরকারি মিলিয়ে ১০ থেকে ১৫টি বরফকল। কাছাকাছি সাব স্টেশন তৈরি না হওয়ায় বিদ্যুৎ সঙ্কটের জন্য তাদেরও সমস্যায় পড়তে হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রায় সারা বছর ধরে পর্যটকেরা বকখালিতে বেড়াতে আসেন। অথচ বিভিন্ন সময়ে লোডশেডিং থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়। এলাকায় একটি সাব স্টেশনের দাবি জানানো হয়েছে বহুদিন। কিন্তু এর কোনও সমাধান হচ্ছে না।
বকখালি ফ্রেজারগঞ্জ হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অলোক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখানে প্রায় সমস্ত হোটেলে কম বেশি এসি ঘর রয়েছে। হোটেলগুলিতে বড় জেনারেটর নেই। লোডশেডিং হলে এসি চালানো যায় না। ফলে পর্যটকদের সমস্যা হয়। একটি সাব স্টেশন হলে বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে না।’’
বিদ্যুতের সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন নামখানা পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষুদ্র শিল্প, বিদ্যুৎ ও চিরাচরিত শক্তির কর্মাধ্যক্ষ নীলকন্ঠ বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘বকখালির সমুদ্র সৈকতে ঢোকার মুখে ডান দিকে ও হাতিকর্নারের কাছে কয়েকটি হাইমাস্ট আলোর দরকার। এ ছাড়া পর্যটকেরা অনেকে এখানে এসে এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করেন। কিন্তু ওই এলাকার যাওয়ার রাস্তায় কোনও আলো না থাকায় পর্যটকদের সমস্যার পাশাপাশি স্থানীয়রাও সমস্যায় পড়েন। তাই বিদ্যুতের ঘাটতি মেটাতে বকখালিতে একটি সাব স্টেশনের খুব দরকার। দাবিগুলি বিভাগীয় দফতরে জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কেও লিখিত ভাবে জানিয়েছি।’’
জেলা বিদ্যুৎ দফতরের এক আধিকারিক জানান, বকখালিতে সাব স্টেশনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।