সৌমেন পাত্র। নিজস্ব চিত্র।
উচ্চমাধ্যমিকে অষ্টম। কিন্তু অভাবের তাড়নায় পড়াশোনা ছেড়ে চাকরি করতে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন সেই মেধাবী ছাত্র। তবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁর প্রতিবেশী এবং আত্মীয়রা। এ বার সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন সফল হতে চলেছে তাঁর। বাড়ি ফিরে নতুন জীবন শুরু করতে চলেছেন উচ্চ মাধ্যমিকে অষ্টম স্থানাধিকারী সৌমেন পাত্র।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাথরপ্রতিমার শ্রীধরনগর পঞ্চায়েতের উপেন্দ্রনগরের বাসিন্দা সৌমেন। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৪৯১ পেয়ে মেধাতালিকায় অষ্টম স্থানে জায়গা করে নিয়েছিলেন কাকদ্বীপের বামানগর সুবালা উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই ছাত্র। কিন্ত সৌমেনের সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ওঠার পথে বাধা দারিদ্র। তাঁর বাবা-মা দু’জনেই দিল্লিতে কাজ করেন। বাবা তপন পাত্র গাড়ি ধোয়ার কাজ করেন। মা অণিমা পাত্র পরিচারিকার কাজ করেন দিল্লিতে। এত দিন মনের জোরেই অভাব অনটনকে হারিয়ে লড়াই চালিয়ে এসেছেন সৌমেন। তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার পর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দিল্লি চলে যান সৌমেন। একটি ছোটখাট সংস্থায় কাজও জুটে যায় তাঁর। সৌমেনের কথায়, ‘‘ইচ্ছে ছিল সফটঅয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ব। কিন্তু পরিবারের অভাব ঘোচাতে বাধ্য হয়েই দিল্লিতে ছুটে যাই। উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত কোনও মতে চালিয়ে নিয়েছিলাম। কিন্তু এর পর পড়াশোনা করার মতো অর্থ আমাদের নেই।’’
সৌমেনের এই সিদ্ধান্তের কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁর আত্মীয় এবং এলাকার কয়েক জন শুভানুধ্যায়ী। তার ফলে স্বপ্ন সফল হতে চলেছে পাথরপ্রতিমার এই কৃতী ছাত্রের। পছন্দের বিষয় নিয়ে এ বার একটি বেসরকারি কলেজে ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হতে চলেছেন সৌমেন। তাই দিল্লির চাকরি ছেড়ে তিনি ফিরে এসেছেন নিজের বাড়িতে। পাশে দাঁড়ানোর মতো ‘বন্ধু’ পেয়ে সৌমেন বলছেন, ‘‘যে কোনও উপায়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতেই হবে। দিল্লিতে যখন কাজ করতাম, তখন খুব কষ্ট হত। উচ্চ মাধ্যমিকে ভাল নম্বর পেয়ে ভেবেছিলাম, আর বোধ হয় পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে না। কিন্তু সকলে আমার পাশে দাঁড়ানোয় নতুন করে জীবন শুরুর ভাবনা ভাবছি।’’