দত্তপুকুর থানার অন্তর্গত উলা গ্রামে বোমা বিস্ফোরণের স্থান চিহ্নিত করছেন এক এলাকাবাসী। —নিজস্ব চিত্র।
দত্তপুকুরের ইছাপুর-নীলগঞ্জ পঞ্চায়েতের মোচপোলে বিস্ফোরণের রেশ এখনও কাটেনি। এরই মধ্যে মঙ্গলবার রাতে বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল পাশের কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের উলা গ্রামের মাঝেরপাড়া এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, একটি বাঁশবাগানে মজুত থাকা বোমায় বিস্ফোরণ হয়। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিস্ফোরণে কেউ হতাহত হয়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত সাড়ে দশটার পর বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে এলাকা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার লোকজন। বাসিন্দারা জানান, বিস্ফোরণের তীব্রতায় ঘর-বাড়ি কেঁপে ওঠে। ফাটল ধরেছে বাঁশবাগানের মাটিতেও। রাতেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে পুলিশ। বুধবার সকালেও বিস্ফোরণস্থলে আসে তারা। পুলিশ জানিয়েছে, তল্লাশি চালিয়ে ওই এলাকা থেকে বোমার টুকরো মিলেছে।
এলাকার মানুষের দাবি, ওই বাঁশবাগানে বোমা মজুত করা ছিল। তা থেকেই বিস্ফোরণ ঘটে। ওই এলাকায় প্রকাশ্যে বোমা বাঁধা হত বলেও অভিযোগ। মাটির তলায় থরে থরে বোমা সাজানো থাকত বলেও জানান অনেকে। অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই বোমা বাঁধা হত ওখানে। ভোটের সময়েও এলাকায় একবার বিস্ফোরণ হয়েছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। স্থানীয় বাসিন্দা সেকেন্দর আলি বলেন, “বিস্ফোরণে বাড়ি কেঁপে ওঠে। ভোটের আগে দিনের বেলায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। আবার একই ঘটনা ঘটেছে। প্রশাসন ব্যবস্থা নিক।” আর এক বাসিন্দা সাহারা বিবি বলেন, “যারা বোমা মজুত করেছে, তাদের রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক।”
এই ঘটনায় তৃণমূলের কোন্দলকে দায়ী করেছে সিপিএম। সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আহমেদ আলি খান বলেন, “কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের বোর্ড ও উপসমিতি গঠন নিয়ে তৃণমূলের কোন্দল চরমে উঠেছে। তার জেরেই বোমা মজুত হচ্ছিল। এর সঙ্গে তৃণমূলই জড়িত। পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করলে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ্যে আসবে।” তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি নিজামুল কবির বলেন, “এই ঘটনায় কারা জড়িত, জানি না। না জেনে দোষারোপ করব না। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।”
এলাকায় সম্প্রতি শক্তিবৃদ্ধি হয়েছে আইএসএফের। উত্তর ২৪ পরগনার আইএসএফ সম্পাদক কুতুবউদ্দিন ফাতেহি বলেন, “আমাদের দলের কেউ কোনও অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িত নয়। পুলিশ আসল অপরাধীদের খুঁজে বের করুক।”