শোকার্ত: মোকাদ্দুসের (ইনসেটে) পরিবার। ছবি: সুজিত দুয়ারি
ব্যবসার কাজে টাকা আনতে যাওয়ার কথা বলে বুধবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন এক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার দেগঙ্গা থেকে উদ্ধার হল তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ। বুধবারই বারাসত স্টেশনে ট্রেনের কামরায় ঝাঁকা থেকে একটি কাটা মাথা উদ্ধার হয়েছিল। এর পরে ফের এ দিন রাস্তার পাশে একটি ডোবায় দেহটি দেখে চাঞ্চল্য ছড়ালো ওই এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, হাবড়ার বাসিন্দা ওই ব্যবসায়ীর নাম মোকাদ্দুস মোল্লা ওরফে মনা (৪৩)। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিকে খুন করে ফেলে রাখা হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন দেগঙ্গা থানার আমুলিয়া পঞ্চায়েতের ঝিকুরিয়া এলাকায় রাস্তার ধারের একটি ডোবায় ক্ষতবিক্ষত দেহটি প্রথমে স্থানীয় বাসিন্দারাই দেখতে পান। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। মৃতের গলায় গামছা জড়ানো এবং পেটে-মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। তা দেখে পুলিশের অনুমান, প্রথমে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাতের পরে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে মোকাদ্দুসকে। দেহ উদ্ধারের পরে মৃতের পকেটে থাকা আধার কার্ড থেকে তাঁর নাম ও পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। এর পরে হাবড়া থানা এলাকার রুদ্রপুরের দক্ষিণপাড়ায় ফোন করে মোকাদ্দুসের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। পরিজনেরা দেগঙ্গা থানায় গিয়ে দেহ শনাক্ত করে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পরিবার সূত্রের খবর, বছর তিনেক ধরে অশোকনগরে দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকছিলেন মোকাদ্দুস। ঘটনার দিন দক্ষিণপাড়ায় দাদাদের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর দাদা গফ্ফর মোল্লা জানান, রাত ৯টা নাগাদ ব্যবসায়িক কারণে কিছু টাকা আনার জন্য ঝিকুরিয়া যাওয়ার কথা বলে বার হন মোকাদ্দুস। যাওয়ার আগে বাড়ির জন্য মাছ-মাংস কিনে তাঁর দুই ছেলেকে দিয়ে পাঠিয়ে দেন। মোকাদ্দুস জানান, রাতে বাড়ি গিয়ে খাবেন। গভীর রাতেও না ফেরায় তাঁর স্ত্রী ভাসুর গফ্ফরকে ফোনে বিষয়টি জানান। তখন মোকাদ্দুসের ফোন বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ মারফত খবরটি পৌঁছয়।
এলাকার মানুষ জানান, মাটি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মোকাদ্দুস। এ জন্য তাঁর জেসিবি ও দু’টি লরি রয়েছে। পাশাপাশি টালির ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। ঝিকুরিয়া এলাকায় এক ব্যক্তির কাছ থেকে টালি বিক্রি বাবদ ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার কথা ছিল। মোকাদ্দুসের বৌদি আউলিয়া খাতুনের দাবি, ‘‘ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণে কেউ ওকে খুন করে থাকতে পারে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।