—প্রতীকী ছবি।
ছেলে অন্ধ্রপ্রদেশে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করেন। রোজই বার দু’-তিনেক মা ছেলের মধ্যে কথা হয়। শুক্রবার রাতেও হয়েছিল। কিন্তু পর দিন অর্থাৎ, শনিবার সকাল থেকে সেই ছেলে বেপাত্তা। তাঁকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে বেলার দিকে এক হিন্দিভাষী আরপিএফ বাড়িতে ফোন করে জানান, রেললাইনের পাশ থেকে ছেলের ক্ষতবিক্ষত দেহ পাওয়া গিয়েছে! ভিন্রাজ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের বাসিন্দা ওই যুবকের রহস্যমৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরিবারের দাবি, যুবককে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম অনুপম চক্রবর্তী। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ তাঁর দেহ পৌঁছয় জয়নগরের উত্তর দুর্গাপুর গ্রামের বাড়িতে। পরে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর মহাশ্মশানে দাহ করা হয় অনুপমের দেহ। বারুইপুর এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘দেহ উদ্ধার হওয়ার পর আইডেন্টিফিকেশনের জন্য জয়নগর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল ওখানকার পুলিশ।’’
পরিবার জানিয়েছে, গত এক বছর ধরে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করছিলেন অনুপম। অ্যানিমেশনের কাজ করতেন তিনি। প্রতি দিন নিয়ম করে সকাল-বিকেল মা, বাবার সঙ্গে ফোনে কথা হত অনুপমের। শুক্রবার রাতেও মা কবিতা চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হয়েছিল ছেলের। কিন্তু শনিবার সকাল থেকে অনুপমকে ফোনে না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ে পরিবারের লোকেরা। এর পর বেলা ১২টা নাগাদ একটি ফোন আসে বাড়িতে। ফোনের ও পার থেকে এক হিন্দিভাষী ব্যক্তি নিজেকে আরপিএফ পরিচয় দিয়ে জানান, রেললাইনের ধার থেকে অনুপমের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছে। খবর পেয়েই অন্ধ্রপ্রদেশের উদ্দেশে রওনা দেন অনুপমের বাবা নচিকেতা চক্রবর্তী ও পরিবারের আরও কয়েক জন। অনুপমের কাকা ধনঞ্জয় চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘ভাইপোর মৃত্যু কোনও স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। ওকে কেউ পরিকল্পনা করে খুন করে। আমরা পুলিশি তদন্ত চাই।’’
গত ১৬ সেপ্টেম্বরই ছেলের কাছে গিয়েছিলেন কবিতা এবং নচিকেতা। সেখানে তাঁদের নিজের কর্মস্থল ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন অনুপম। তিন দিন বিশাখাপত্তনমে কাটিয়ে গত মঙ্গলবারই জয়নগরে ফিরেছিলেন মা, বাবা। কবিতা বলেন, ‘‘অফিসে ভাল করার জন্য কয়েক জন সহকর্মী অনুপমকে ঈর্ষা করত। ওকে সহ্য করতে পারছিল না। ওকে বাংলায় ফিরে যাওয়ার কথা বলত। চক্রান্ত করেই আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। খুন করে রেললাইনের পাশে ফেলে দেওয়া হয়েছে ওর দেহ।’’