ভিড়: এই ঘর থেকেই উদ্ধার হয় সদ্যোজাতের দেহ। নিজস্ব চিত্র
দুর্গন্ধে টিঁকতে পারছিলেন না পাড়া-পড়শি। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পাড়ার এক বাড়ি থেকে সদ্যোজাত কন্যাসন্তানের দেহ উদ্ধার করল।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বনগাঁ থানার ঠাকুরপল্লি এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, দিন কয়েক আগে ওই বাড়িটি এক দম্পতি ভাড়া নিয়েছিলেন। মৃত শিশুকে ঘরে নাইটি জড়িয়ে মশারির মধ্যে রাখা হয়েছিল। এই ঘটনায় এক মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। শিশুর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, আটক হওয়া মহিলা শিশুটির মা। যদিও তা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ দানা বেঁধেছে। কয়েকজন পড়শি মহিলার কথায়, ‘‘আটক মহিলাকে দেখে মনে হত তিনি অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু জানতে চাইলে বলতেন, পেটে বড় টিউমার হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক মাস আগে এক দম্পতি ঠাকুরপল্লি এলাকায় ওই বাড়ি ভাড়া নেন। তাঁদের তিন বছরের এক ছেলেও রয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রবিবার ভোরে তাঁরা ওই মহিলার চিৎকার শুনেছিলেন। সুষমা বিশ্বাস নামে এক বৃদ্ধা বলেন, ‘‘সোমবার সকাল ৭টা নাগাদ মহিলার ঘর থেকে বাচ্চার কান্না শুনে ঘরে যাই। কিন্তু তা নিয়ে প্রশ্ন করলে মহিলা কোনও জবাব দেননি। আমাকে ঘর থেকে চলেও যেতে বলেছিলেন।’’
ওই ঘটনার পর দম্পতি বাড়ি থেকে চলে যান। যাওয়ার সময়ে মহিলা বলেছিলেন, চিকিৎসককে দেখাতে যাচ্ছেন। তারপরে আর তাঁরা বাড়ি ফেরেননি। সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ পাওয়ার পর থেকে বাসিন্দাদের সন্দেহ বাড়তে থাকে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে পচা দুর্গন্ধ বেরোতে থাকে। খবর যায় পুলিশের কাছে।
পুলিশ এসে ঘরের তালা ভেঙে ঢুকে শিশুর দেহ উদ্ধার করে। পরে রামকৃষ্ণপল্লি এলাকা থেকে ওই মহিলাকে আটক করা হয়েছে। কী ভাবে সদ্যোজাতের মৃত্যু হল তা নিয়ে মহিলা এ দিন বিকেল পর্যন্ত নির্দিষ্ট কিছু বলতে চাননি বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সুব্রত কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘কোনও বৈধ নথিপত্র ছাড়াই বহিরাগতদের এখানে ভাড়া দেওয়া হয়। কিছু দিন আগে এক দুষ্কৃতীকে অন্য দুষ্কৃতীরা খুন করেছিল এই এলাকায়।’’ স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘‘ভাড়াটেদের সঙ্গে সন্দেহজনক লোকজনের আনাগোনা দেখা যায়।’’ তাঁদের দাবি, আটক হওয়া মহিলা কিছু দিন আগে একটি মুরগি চুরি করেছিলেন। পরে এলাকার লোকজন মহিলার ঘরে আলমারি থেকে সেই মুরগি মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন।’’