বিক্ষোভ-সমাবেশ: এই সভা থেকেই বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিধায়ক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
বিডিওকে গণধোলাইয়ের হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক স্বপন মজুমদার।
সোমবার দুপুরে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা কমিটির পক্ষ থেকে বনগাঁ বিডিও অফিসের সামনে আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সভা করা হয়। বিজেপির কর্মী সমর্থকেরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই সভা থেকে বিজেপি বিধায়কেরা বনগাঁর বিডিও অর্ঘ্য দত্তকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি রামপদ দাসের অভিযোগ, আবাস যোজনার তালিকায় পাকা দোতলা-তিনতলা বাড়ির মালিকদের নাম আছে। অথচ বহু প্রকৃত গরিব মানুষের নাম তালিকায় নেই। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান-সহ নেতা-নেত্রীর নামও তালিকায় আছে। এঁদের সকলের পাকা বাড়ি রয়েছে বলে বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ। বিজেপি নেতারা মনে করছেন, এ সবের পিছনে বিডিও-র মদত রয়েছে।
এদিনের সভায় বিধায়ক স্বপন বিডিওকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘আপনি তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছেন। তৃণমূলের দালালি বন্ধ করুন। আপনাকে আমরা চিনে রাখছি, দেখে রাখছি। ভাববেন না আপনাকে আমরা ছেড়ে দেব।’’
স্বপন হুমকি দিয়ে বলেন, ‘‘আপনি যদি কাজ সুষ্ঠু ভাবে না করেন, তা হলে আগামী দিনে আপনি দেখবেন, বিডিও অফিসের গেট ভেঙে ঘরে গিয়ে পাবলিক গণধোলাই দেবেন। তৃণমূলের দালালেরা আপনাকে বাঁচাতে আসবে না।’’
বনগাঁ দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া বলেন, ‘‘আপনি তো (বিডিও) সরকারি আধিকারিক। সঠিক ভাবে কাজ করুন। না হলে গরিব মানুষদের সরকারি প্রকল্পে পাকা বাড়ি পাওয়ার যে লড়াই বিজেপি শুরু করেছে, সেই আগুনে আপনিও পুড়ে ছাড়খাড় হয়ে যাবেন।’’
এ দিনের কর্মসূচিতে আসা বহু মানুষও বিডিওর উপর ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, বার বার প্রশাসনের কাছে আবেদন করেও পাকাবাড়ি পাওয়া যায় না। অথচ পাকাবাড়ির মালিকেরা পরিবারের সদস্যদের নামেও ঘর পাচ্ছেন। আরও অভিযোগ, অফিসে গেলে বিডিওর দেখা মেলে না। তিনি সমস্যার কথা শুনতে চান না।
এ দিনের সভা থেকে স্বপন পুলিশকেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ এখানে তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। আগামী দিনে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে। জনগণ আপনাদের গাছে বেঁধে রেখে দেবেন।’’
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ার জন্য বিডিও অর্ঘ্য দত্তকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিজেপির অভিযোগ নিয়ে তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বনগাঁ সাংগঠনিক জেলায় বিজেপির পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। ওরা বিভ্রান্ত হয়ে কু-কথা বলছে। ওরাই মানুষকে বেঁধে রাখা, মানুষকে মারার কথা বলে। পঞ্চায়েত ভোটে মানুষ ওদের উচিত শিক্ষা দেবেন।’’