—প্রতীকী চিত্র।
বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে গত বছর নির্বাচনের পরে গাইঘাটার ফুলসরা পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করে বিজেপি। কিন্তু তাদের এক সদস্য বুধবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় ওই পঞ্চায়েতে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ল বিজেপি। ফলে, পঞ্চায়েতটি তাদের হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
হরষিত বিশ্বাস নামে ওই বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য এ দিন বনগাঁ শহরে তৃণমূলের সাংগঠনিক জেলা কার্যালয়ে এসে নতুন দলে যোগ দেন। তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘‘হরষিত-সহ ওই এলাকার ৪০ জন বিজেপি কর্মী এ দিন তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আমরা এখন ওই পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠ হলাম। বিজেপির প্রধানের বিরুদ্ধে আমরা অনাস্থা আনতে চলেছি। প্রধান আমাদের হবে।’’
ফুলসরা পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৪। গত পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি ১২টি এবং তৃণমূল ১১টি আসন পেয়েছিল। একটি আসনে জয়ী হন নির্দল প্রার্থী রজত মিত্র। কোনও দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। বোর্ড গঠনের সময় রজত তৃণমূলকে সমর্থন করেন। ফলে, তৃণমূল ও বিজেপির আসন সমান হয়। লটারিতে জয়ী হয়ে প্রধান হন বিজেপির টুসি রায়সেন। লটারিতে জিতে উপপ্রধান হন রজত। পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।
বোর্ড গঠন না হওয়া পর্যন্ত বিজেপি তাদের জয়ী ১২ জন প্রার্থীকে সপরিবারে একটি বাড়িতে কার্যত গৃহবন্দি করে রেখেছিল। কারণ, তৃণমূল তাঁদের ভাঙিয়ে নিতে পারে, এই আশঙ্কা ছিল বিজেপির। এক বছর পরে অবশ্য বিজেপির এক সদস্যকে খোয়াতে হল। পঞ্চায়েতে তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা বেড়ে হল ১৩। বিজেপির কমে ১১ জন।
হরষিত ওই পঞ্চায়েতের ১২৮ নম্বর বুথের সদস্য। কেন তিনি দলত্যাগ করলেন? হরষিত বলেন, ‘‘বিজেপিতে থেকে কাজ করতে পারছিলাম না। জনগণ আমাকে ভোট দিয়েছিলেন এলাকার উন্নয়ন করতে। সেটাই করতে পারছিলাম না। একটা রাস্তা করতে হলেও মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করতে হয়। তাই তাঁর হাত ধরলাম এলাকার উন্নয়ন করতে।’’
বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবদাস মণ্ডলের দাবি, ‘‘হরষিতকে ভয় দেখিয়ে চাপ দিয়ে তৃণমূল দলে নিয়েছে। নিজের ভুল বুঝতে পেরে আবার উনি বিজেপিতে ফিরবেন।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে বিশ্বজিতের পাল্টা দাবি, ‘‘হরষিত স্বেচ্ছায় আমাদের দলে এসেছেন। কোনও ভদ্র মানুষ বিজেপিতে থাকতে পারবেন না। এর পরে বনগাঁ মহকুমায় বিজেপির দখলে থাকা চারটি পঞ্চায়েতই আমরা দখল করব। শুরুটা হল ফুলসরা থেকে।’’