বাঁ দিক নিহত সাধন মণ্ডল। ডান দিকে ধৃত ভাস্কর মাল। — নিজস্ব চিত্র।
বিষ্ণুপুরে তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় বিজেপির এক নেতাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, ধৃত ভাস্কর মালই ওই হত্যাকাণ্ডের ‘মূলচক্রী’। পুলিশ ধৃতকে জেরা করছে। এই গ্রেফতারির পর তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে চাপান-উতোর তুঙ্গে উঠেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুরের আঁধারমানিক অঞ্চলের বিজেপি নেতা ভাস্কর। তাঁকে সোমবার গ্রেফতার করা হয়েছে। ভাস্কর বিজেপির আঁধারমানিক অঞ্চলের আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রবিবার দুপুরে ভাস্করের বাড়িতে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই তৃণমূলের বুথ সভাপতি সাধন মণ্ডলকে খুনের ছক কষা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বপন মণ্ডল এবং শুভাশিস মণ্ডল নামে আরও দুই জন। পুলিশের দাবি, তাঁরা জানতেন, প্রতি দিন সন্ধ্যায় সাধন চায়ের দোকানে যান। তাই খুনের জন্য ওই সময়টাকেই বেছে নেওয়া হয় বলে পুলিশের দাবি।
তদন্তকারীদের একটি সূত্রের দাবি, রবিবার চায়ের দোকানে আগেই গিয়েছিলেন স্বপন। সেখানে পৌঁছে তিনি ফোনে যোগাযোগ করেন ভাস্করের সঙ্গে। তার পর পরিকল্পনা মাফিক বাইক চালিয়ে দুই সুপারি কিলারকে নিয়ে পৌঁছয় শুভাশিস। স্বপন সাধনকে চিনিয়ে দেন। এর পর বাইক থেকে নেমে খুব কাছ থেকে সাধনকে লক্ষ্য করে পর পর গুলি করে দুষ্কৃতীরা। সাধন লুটিয়ে পড়লে বাইক নিয়ে চম্পট দেয় আততায়ীরা। সাধন হত্যাকাণ্ডের এই তথ্য তদন্তে উঠে এসেছে বলে পুলিশের দাবি। এই নিয়ে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার এসপি ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘ভাস্কর এই খুনের মাস্টারমাইন্ড। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’
মঙ্গলবার ধৃতকে হাজির করানো হবে ডায়মন্ড হারবার আদালতে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিজেপিকে নিশানা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের দুর্গাবাটি অঞ্চলের সভাপতি পিন্টু সর্দার বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকেই বলছিলাম, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে বিজেপি আছে। এই গ্রেফতারের ফলে তা প্রমাণিত হল।’’ যদিও বিজেপির দাবি, তাদের কর্মীদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে। বিজেপির ডায়মন্ড হারবার সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সুফল ঘাঁটি বলেন, ‘‘শাসকদলের কথায় বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’ রবিবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানার দুর্গাবাটিতে খুন হন ওই এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি সাধন। সেই সময় এলাকার একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন তিনি। বাইক আরোহী দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।