ফাঁকা ডাকঘর। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক দিন ধরে জমানো টাকা তোলার জন্য ডাকঘরে লাইন দিচ্ছেন সত্তরোর্ধ্ব সনাতন মণ্ডল। কিন্তু ডাকঘরে লিঙ্ক না থাকায় তাঁকে প্রতিদিনই খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। টাকা তুলতে না পেরে সমস্যায় পড়েছেন। নিজের এবং অসুস্থ স্ত্রীর ওষুধ পর্যন্ত কিনতে পারছেন না। শুধু সনাতনই নন, টাকা তুলতে না পেরে সমস্যায় পড়েছেন মৌমিতা মণ্ডল, ইয়াকুব মোল্লা সহ অনেকে। গ্রাহকদের অভিযোগ, দিন দশেক ধরে ডাকঘরে লিঙ্ক নেই। ফলে টাকা তুলতে পারছেন না কেউ। ইন্টারনেটের সমস্যার জন্য অফিসের নিজস্ব কাজকর্মও ব্যাহত হচ্ছে। অধিকাংশ সময়ে ওই ডাকঘরে বিএসএনএলের ব্রডব্যান্ড লিঙ্ক থাকে না বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ।
মৌমিতা বলেন, ‘‘আমার স্বামী মারা যাওয়ার পরে ডাকঘরে একটা ফিক্সড ডিপোজিট ছিল। টাকা ম্যাচিয়োর হয়ে যাওয়ার পরেও টাকা তুলতে পারছি না। সামনেই মেয়ের বিয়ে। কেনাকাটা করার জন্য টাকার প্রয়োজন।’’ ইয়াকুব মোল্লা বলেন, ‘‘আমরা বয়স্ক মানুষ, পেনশনের টাকায় সংসার চলে। ডাকঘরে অধিকাংশ সময়ে গেলে বলা হয়, লিঙ্ক নেই। বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বারবার যাওয়া সম্ভব হয় না। টাকা তুলতে না পারায় খুব ভুগছি।’’ স্পিড পোস্ট, রেজিস্ট্রি পোস্ট সহ টাকা জমা দেওয়া, তোলা— কোনও কিছুই ঠিকমতো হচ্ছে না বলে অভিযোগ। গ্রাহকেরা দিনের পর দিন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এ রকম চলতে থাকলে অনেকেই মনে করছেন, ডাকঘর থেকে জমানো টাকা তুলে অন্যত্র সরিয়ে নেবেন। ভাঙড় ডাকঘরের পোস্টমাস্টার ললিতমোহন সিংহ বলেন, ‘‘বিএসএনএলের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ। যে কারণে দফতরের সমস্ত কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট দফতর ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ এ বিষয়ে বিএসএনএলের জেটিও শম্পা দত্ত বলেন, ‘‘বেশ কিছু জায়গায় বিএসএনএলের অপটিক্যাল ফাইবারের তার কেটে যাওয়া সমস্যা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা বিভিন্ন জায়গার পরিষেবা স্বাভাবিক করে ফেলেছি। ভাঙড় ডাকঘরেও সমস্যা তৈরি হয়। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।’’