আরাবুল ইসলাম। —ফাইল চিত্র।
ভাঙড়ের প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের জামিনের আবেদন নাকচ করে দিল আদালত। আরাবুল অসুস্থ। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি বাড়িতে চিকিৎসাধীন— এই কথা জানিয়ে তাঁর জামিন চাওয়া হয়। যদিও পুলিশের তরফে আইনজীবী জানান, তদন্তের প্রয়োজনে আরাবুলকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চান তদন্তকারীরা। দু’পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাবের পর বারুইপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের বিচারক অলিভিয়া রায় আরাবুলকে ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভাঙড় থেকে গ্রেফতার করা হয় আরাবুলকে। তাঁকে নিয়ে যাওয়া লালবাজার। পঞ্চায়েত ভোটের সময় এক আইএসএফ নেতার খুনের ঘটনায় তৃণমূল নেতাকে ধরে পুলিশ। শুক্রবার আরাবুলকে আদালতে তোলা হলে তাঁক আইনজীবী বলেন, ‘‘সে দিন তিন হাজার লোকের নামে অভিযোগ করা হয়েছিল। এখন ওই ঘটনার প্রায় আট মাস বাদে গ্রেফতার করা হয়েছে আমার মক্কেলকে।’’ আরাবুলের আইনজীবী এ-ও দাবি করেন যে, ঘটনার সময় ভাঙড়-২ বিডিও অফিসে বসে ছিলেন আরাবুল। ওই হামলায় জড়িত নন তিনি। পাশাপাশি যুক্তি দেওয়া হয়, সেই ঘটনা যখন ঘটল, তখনই কেন আরাবুলকে গ্রেফতার করা হল না? প্রয়োজনে ওই ঘটনার দিন বিডিও অফিসের সিসি ফুটেজ দেখার কথা বলা হয়।
এর পরে আদালতে তৃণমূল নেতার আইনজীবী বলেন, ‘‘আরাবুল ভীষণ অসুস্থ। দীর্ঘ দিন ধরে চিকিৎসাধীন। আর পঞ্চায়েত ভোটের সময় তো তাঁর গাড়ির ড্যাশবোর্ডে বোমা রেখে খুনের চেষ্টা করা হয়েছিল।’’ পাশাপাশি দাবি করা হয়, কলকাতা পুলিশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আরাবুলকে গ্রেফতার করেছে এবং হেফাজতে নিতে চাইছে। তাই তাদের আবেদন খারিজ করা হোক। আরাবুলের এক আইনজীবী বলেন, ‘‘ঘটনার এত দিন বাদে অস্ত্র উদ্ধারের নামে হয়রানি করা হচ্ছে আমার মক্কেলকে।’’
অন্য দিকে, পুলিশের পক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘‘আট মাস বাদে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যে তিন হাজার মানুষ ঘটনাস্থলে ছিলেন, তাঁদের আরাবুল ‘কন্ট্রোল’ করছিলেন। ঘটনার যথাযথ তদন্ত হোক। যে অস্ত্রের ব্যাবহার হয়েছিল, সেই অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে।’’ তাই জামিনের আবেদন অগ্রাহ্য করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়।
শেষমেশ আরাবুলকে পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়ে আদালত জানায় আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি পুনরায় তৃণমূল নেতাকে আদালতে হাজির করাতে হবে। আর সময় সময় ধৃতের শারীরিক পরীক্ষানিরীক্ষা করারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।