Coronavirus

পুলিশি নজরে বারাসত, নিয়ম ভেঙে ধৃত ৫১

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা দিনই পুলিশের কড়াকড়ির এমন চিত্র দেখা গেল বারাসত, মধ্যমগ্রাম-সহ উত্তর শহরতলি জুড়ে। এ দিন সকাল থেকেই ওই সব এলাকায় বন্ধ ছিল সমস্ত দোকান-বাজার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২০ ০৩:০৮
Share:

বারাসতের কলোনি মোড়ে পুলিশ ও র্যাফের নজরদারি। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা। বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে মুখে মাস্ক পরা এক স্কুটারচালককে আটকাল র্যাফ। কোথায় যাচ্ছেন? উত্তরে যুবক জানালেন, বিশেষ কাজে দত্তপুকুরে কাকার বাড়ি যাচ্ছেন। কিন্তু লকডাউনে কী সেই বিশেষ কাজ? তখন যুবক স্বীকার করেন, কাকার বাড়িতে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাচ্ছেন তিনি। তা শুনেই পত্রপাঠ তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দিল র্যাফ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সারা দিনই পুলিশের কড়াকড়ির এমন চিত্র দেখা গেল বারাসত, মধ্যমগ্রাম-সহ উত্তর শহরতলি জুড়ে। এ দিন সকাল থেকেই ওই সব এলাকায় বন্ধ ছিল সমস্ত দোকান-বাজার। গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়া রাস্তায় তেমন ভাবে মানুষ বেরোননি। ওই স্কুটারচালকের মতো জরুরি কাজ ছাড়া যাঁরা বেরিয়েছিলেন, তাঁদের ধমকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ এবং র্যাফ। বিধি না-মানার জন্য এ দিন ৫১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

এ দিন সকাল থেকেই ৩৪ এবং ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের এয়ারপোর্ট, দোলতলা, মধ্যমগ্রাম চৌমাথা, ডাকবাংলো মোড়, চাঁপাডালি মোড়, কলোনি মোড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় ছিল পুলিশ পিকেট। বিভিন্ন রাস্তায় ছিল পুলিশের টহলদারি গাড়ি ও মোটরবাইক। বারাসত পুলিশ জেলার কর্তাদেরও বিভিন্ন রাস্তা এবং মোড়ে দাঁড়িয়ে তদারকি করতে দেখা যায়। এর পাশাপাশি, মধ্যমগ্রামে ড্রোন নামিয়ে চলে নজরদারি। এলাকার জাতীয় সড়ক এবং রাজ্য সড়কগুলিতে গার্ড রেল বসিয়ে নাকা তল্লাশির ব্যবস্থা ছিল। কেউ রাস্তায় বেরোনোর সঙ্গত কারণ দেখাতে পারলে তবেই মিলেছে ছাড়।

Advertisement

সকাল ৮টা নাগাদ বারাসত সংলগ্ন কাজিপাড়া এলাকায় কিছু দোকান খোলা ছিল। মাস্ক ছাড়া ঘোরাফেরা করছিলেন কিছু বাসিন্দাও। খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাফ সেখানে গিয়ে দোকান বন্ধ করে দেয়। মধ্যমগ্রাম চৌরাস্তায় বিভিন্ন দিক থেকে আসা বেশ কিছু মানুষকে এ দিন আটকানো হয়। অনেকেই জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকায় তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ। তবে বিনা কারণে বেরোনো ব্যক্তিদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিধি ভাঙা ও পুলিশের নির্দেশ না

মানায় মধ্যমগ্রাম চৌরাস্তা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ১০ জনকে। বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘সারা দিন কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া, বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করার জন্য মোট ৫১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’

সকাল ১০টা নাগাদ হেল্পলাইনে ফোন পেয়ে মাইকেলনগরের এক বৃদ্ধার বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেয় পুলিশ। মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা মধ্যমগ্রাম পুরসভার প্রশাসক রথীন ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষকে বাড়তি সচেতন থাকতে হবে। হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করলে পুরসভা এবং পুলিশ যৌথ ভাবে সাহায্য করবে।’’ করোনা জয় করে সম্প্রতি ফের কাজে যোগ দিয়েছেন বারাসত পুরসভার বর্তমান প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ রুখতেই এই লকডাউন। বারাসতে তা টানা চলবে। বিধি না-মানলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। এটা সকলকে বুঝতেই হবে।’’

অন্য দিকে, বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চালু করতে চলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। ওই হাসপাতালকে কোভিড হাসপাতাল ঘোষণা করায় স্থানীয় মানুষ এবং ওই হাসপাতালের কিছু কর্মী আগে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো গিয়েছে। করোনা আক্রান্তদের জন্য বারাসতে এটিই হবে প্রথম হাসপাতাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement