Bangladesh

Petrapol: বিক্ষোভ ট্রাক চালকদের, ব্যাহত সীমান্ত বাণিজ্য

দিন কয়েক আগেই বেনাপোল বন্দরে এক ভারতীয় ট্রাক চালককে মারধর করে টাকা, মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পেট্রাপোল শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:২৯
Share:

প্রতিবাদ: বিক্ষোভ কর্মসূচিতে শামিল হয়েছেন চালক ও খালাসিরা। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

পণ্য নিয়ে বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরে গিয়েছিলেন কয়েকজন ভারতীয় ট্রাক চালক। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশি সশস্ত্র দুষ্কৃতীরা মারধর করে, রাসায়নিক ছিটিয়ে চালকদের অজ্ঞান করে টাকা-মোবাইল ছিনিয়ে নিয়েছে।
দিন কয়েক আগেই বেনাপোল বন্দরে এক ভারতীয় ট্রাক চালককে মারধর করে টাকা, মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, হৃষিকেশ যাদব নামে উত্তরপ্রদেশের ওই ট্রাক চালককে অস্ত্র দিয়ে কোপানোও হয়।

Advertisement

বেনাপোল বন্দরে পর পর এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন এ দেশের চালক-খালাসিরা। বুধবার সকাল থেকে তাঁরা পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে জড়ো হয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এ দেশের ট্রাক চালক-খালাসিরা পণ্য নিয়ে বেনাপোলে যেতে আপত্তি জানান। এর ফলে সকাল ১১টা পর্যন্ত বাণিজ্যের কাজ ব্যাহত হয়। ট্রাক চালক ও খালাসিদের সমর্থন জানিয়েছেন বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত এ দেশের বিভিন্ন সংগঠনও।
পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানানো হয়েছে, এদিন সকালে নো-ম্যানস ল্যান্ডে এসে ভারতীয় ট্রাক চালকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেন বেনাপোল বন্দরের সহকারী ডিরেক্টর সঞ্জয় বারই। এরপরে অবস্থান-কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন চালকেরা। ক্লিয়ারিং এজেন্ট সংগঠনের সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাতে বেনাপোল বন্দরে ১০ জন ভারতীয় ট্রাক চালককে শারীরিক নিগ্রহ করে টাকা, মোবাইল ছিনতাই করেছে বাংলাদেশি দুষ্কৃতীরা। বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। এ দেশ থেকে পণ্য নিয়ে যাওয়া ট্রাক দ্রুত খালি করার আশ্বাসও দিয়েছেন তাঁরা।’’

আক্রান্ত ট্রাক চালক ফিরোজ সিংহ বলেন, ‘‘রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে ট্রাকে ঘুমিয়েছিলাম। ১০-১২ জন দুষ্কৃতী বেনাপোল বন্দরে ঢুকে আমাকে ডেকে তোলে। ধারাল অস্ত্র দেখিয়ে মারধর করে। ৬ হাজার টাকা, মোবাইল কেড়ে নেয়। এখন আমার কাছে খাওয়ারও টাকা নেই।’’ আক্রান্ত আরও এক ট্রাক চালক সন্তু রাও বলেন, ‘‘ওরা কিছু রাসায়নিক ছিটিয়েছিল। আমরা কয়েক জন বেহুঁশ হয়ে পড়ি। টাকা, মোবাইল ছিনতাই করে পালায় দুষ্কৃতীরা।’’
বন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, আক্রান্ত চালকেরা সকলেই ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দা। ঘটনার পরে তাঁরা বেনাপোলে ট্রাক রেখে পেট্রাপোল চলে আসেন।

Advertisement

ভারতীয় ট্রাক চালক ও খালাসিদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ, বেনাপোল বন্দরে পণ্য নিয়ে যাওয়া ভারতীয় ট্রাক চালক ও খালাসিদের নিরাপত্তা নেই। অতীতেও বহুবার এ নিয়ে সরব হয়েছেন তাঁরা। তবে সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয়নি। বনগাঁ মহকুমা পরিবহণ শ্রমিক ইউনিয়নের সম্পাদক প্রভাস পাল জানান, নভেম্বর মাসেও বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় এক ট্রাক চালককে মারধর করে টাকা, মোবাইল, ট্রাকের নথিপত্র, ঘড়ি ছিনতাই হয়েছিল। ডিসেম্বর মাসে পর পর চালকেরা আক্রান্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার বেনাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে ৫ দিনের সময় চেয়েছেন। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। জিরো পয়েন্টে একটি অভিযোগ জানানোর বাক্স রাখা হবে। আমাদের অভিযোগ থাকলে সেখানে জমা দেওয়া
যাবে।’’

জনপথ পরিবহণ মজদুর ইউনিয়নের জেলা কমিটির সদস্য সন্তোষ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ট্রাক চালকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তাঁরা বেনাপোলে যেতে চাইছেন না। আমরা সরকারি হস্তক্ষেপ চাইছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement