বাইরে থেকে শহরে ট্রাক ঢোকা বন্ধ করতে চাকদা রোডে বসানো হয়েছে গার্ডরেল।
বনগাঁ শহরের সড়কগুলি এমনিতেই সংকীর্ণ। ওই সংকীর্ণ সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। ওই সড়কগুলির উপর অবৈধ ভাবে তৈরি করা হয় ওভারগেট বা তোরণ। এর ফলে সড়কগুলি আরও সংকীর্ণ হয়ে যায়। শহরবাসী মনে করছেন, বনগাঁ শহরের যানজট ও দুর্ঘটনার প্রধান কারণ ওই সব তোরণ।
শহরবাসী জানান, বনগাঁ শহরের রাস্তাগুলির দিকে চোখ রাখলেই দেখা যাবে তোরণ বাঁধা আছে। বছর ভর এ ভাবেই চলে। যে কোনও অনুষ্ঠানে উদ্যোক্তারা সড়কে তোরণ তৈরি করেন। এটা এক প্রকার নিয়মে পরিণত হয়েছে। সচেতনতার কোনও বালাই নেই।
সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয়— যে কোনও অনুষ্ঠানেই তোরণ বাঁধা হয়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সড়কে ওভারগেট তৈরি করতে হলে সংশ্লিষ্ট সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। অভিযোগ, বাস্তবে বেশির ভাগ অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা অনুমতি না নিয়েই তোরণ তৈরি করেন। বাসিন্দারা জানালেন, অনুষ্ঠানের প্রচারের উদ্দেশ্যে উদ্যোক্তরা ওভারগেট তৈরি করেন। অনুষ্ঠান শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকে তোরণ তৈরি হয়ে যায়। অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার এক সপ্তাহ পরেও তোরণ খোলা হয় না। তোরণের জন্য যানজট আরও বাড়ে।
দিন কয়েক আগে বনগাঁ পুলিশ প্রশাসন ও পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এখন থেকে অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তোরণ খুলে নিতে হবে। যাঁরা তোরণ তৈরি করেন তাঁদেরও ওই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তোরণ খোলা না হলে পুলিশ মালিকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে।
অভিযোগ, বেশির ভাগ ডেকরেটর্সের মালিকেরা একটি তোরণ তৈরি করে পরপর কয়েকটি অনুষ্ঠানের জন্য তা ব্যবহার করেন। সে কারণে তাঁরা খোলেন না। শহরবাসীর একাংশের দাবি, ৪৮ ঘণ্টা নয়, অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তোরণ খুলে ফেলার ব্যবস্থা করুক পুলিশ। সম্ভব হলে যশোর রোড সম্পূর্ণ তোরণ মুক্ত করা হোক বলেও দাবি উঠেছে।
সোমবার সকাল থেকে পুলিশ পদক্ষেপ করে সড়ক থেকে তোরণ খোলার কাজ শুরু করেছে। জেলা পুলিশ সুপার তরুণ হালদার বলেন, ‘‘সড়ক তোরণ মুক্ত করতে পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই সমস্যা মেটাতে সব ধরনের পদক্ষেপ করা হবে।’’