Bangaon

ভুয়ো ভোটার-আধার কার্ড তৈরির চক্র, ধৃত ১

পুলিশ জানিয়েছে, নগেন-সহ এখনও পর্যন্ত ওই চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের নাম, বিদ্যুৎ সরকার, সমীর দাস, শান্তনু মালাকার ও জগন্নাথ দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বনগাঁ শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:১৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

ভুয়ো ভোটার কার্ড, আধার কার্ড-সহ বিভিন্ন ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে বাংলাদেশিদের কাছে তা চড়া দামে বিক্রির একটি চক্রের হদিশ আগেই মিলেছিল। এ বার ওই চক্রের এক সক্রিয় পান্ডাকে গ্রেফতার করল বনগাঁ থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতের নাম নগেন মণ্ডল। তার বাড়ি বনগাঁর চাঁদা-পানচিতা এলাকায়। সে একজন ল’ক্লার্ক হিসেবে বনগাঁ মহকুমা আদালতে কর্মরত। বনগাঁ মহকুমা আদালতের মুখ্য ভারপ্রাপ্ত সরকারি আইনজীবী অসীম দে বলেন, ‘‘ধৃতকে রবিবার আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সে টাকার বিনিময়ে ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র বিক্রি করে।’’

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, নগেন-সহ এখনও পর্যন্ত ওই চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের নাম, বিদ্যুৎ সরকার, সমীর দাস, শান্তনু মালাকার ও জগন্নাথ দাস। ধৃতদের কাছ থেকে প্রচুর ভুয়ো আধার কার্ড, ভোটার কার্ড-সহ অন্যান্য ভারতীয় পরিচয়পত্র উদ্ধার হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে এক বাংলাদেশি মহিলাকে জাল ভারতীয় আধার কার্ড করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এক ভারতীয় ব্যাঙ্ককর্মী। খবর পেয়ে বিএসএফের ঘোনার মাঠ ক্যাম্পের ১৫৮ ব্যাটালিয়নের জওয়ানরা ওই মহিলা ও ব্যাঙ্ককর্মীকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাংলাদেশি মহিলার নাম মঞ্জু মণ্ডল। বাড়ি বাংলাদেশের মাদারিপুর জেলার জুরগোয়া গ্রামে। মহিলা চোরাপথে ভারতে ঢুকে বনগাঁর পানচিতা গ্রামে এক বাড়িতে পরিচারিকার কাজ শুরু করে। পরে আধার কার্ড তৈরির জন্য বিদ্যুৎ সরকার নামে ওই ব্যাঙ্ককর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিদ্যুতের বাড়ি স্বরূপনগর থানার উত্তর কাচদহ এলাকায়। তারা দেখা করার জন্য বনগাঁয় আসে। তখনই তাদের আটক করে জওয়ানেরা। পুলিশ তাদের কাছ থেকে বেশ কয়েকটি মোবাইল, একাধিক ভুয়ো ভোটার-আধার কার্ড-সহ কিছু নথিপত্র উদ্ধার করে। সেই সূত্র ধরে ধরেই ওই চক্রের বাকিদের খোঁজ পায় পুলিশ।

Advertisement

পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, চোরাপথে এদেশে ঢোকার পর বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীরা ভারতীয় পরিচয়পত্র জোগাড়ের চেষ্টা করে। ওই চক্রের সদস্যেরা তাদের কাছে টাকার বিনিময়ে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে দেয়। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, এক-একটি ভুয়ো পরিচয়পত্র বিক্রি করে ২০-৩০ হাজার টাকা আয় হয়। তবে সরাসরি কোনও অনুপ্রবেশকারী তাদের কাছে আসে না। কয়েক হাত ঘুরে তাদের কাছে কাজের বরাত আসে। আবার কয়েক হাত ঘুরেই ভুয়ো পরিচয়পত্র পৌঁছে যায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের কাছে।

কী ভাবে তারা ভোটার কার্ডের হলোগ্রাম সংগ্রহ করত?

তদন্তকারীদের অনুমান, মৃত ব্যক্তি বা অন্যত্র চলে গিয়েছেন এমন মানুষদের ভোটার পরিচয়পত্র তারা জোগাড় করে। সেখান থেকে সংগ্রহ করে হলোগ্রাম। সেগুলি লাগানো হয় ভুয়ো কার্ডে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে চক্রের বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement