(বাঁ দিকে) রঞ্জিত চৌধুরী। জয়ন্ত সিংহ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
আড়িয়াদহকাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর মূল অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংহের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠে আসছে। এ বার জয়ন্তের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন দক্ষিণেশ্বর-রথতলা অটো রুটের চালকদের একাংশ। অভিযোগ, জয়ন্ত এবং তাঁর শাগরেদরা এত দিন ধরে জুলুমবাজি করে আসছিলেন তাঁদের উপর। রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য জয়ন্তের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারেননি। এখন তাঁদের ভয় জয়ন্ত-ঘনিষ্ঠ রঞ্জিত চৌধুরীকে নিয়ে। রঞ্জিতের হাতের উল্কিতে রয়েছে জয়ন্তের ছবি। জয়ন্তের মদতেই এলাকার অটোচালকদের উপর রঞ্জিত অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। অটোচালকেরা চাইছেন, দ্রুত পুলিশের হাতে ধরা পড়ুন ওই অভিযুক্ত। রঞ্জিতের বিরুদ্ধে বেলঘরিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অটোচালকেরা। কিন্তু, পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।
এক অটোচালক বলেন, ‘‘অভিযুক্ত রঞ্জিত জয়ন্তের এতটাই ঘনিষ্ঠ যে, নিজের হাতে জয়ন্তের ট্যাটু পর্যন্ত করিয়েছে। ওদের সব সময় একসঙ্গে দেখা যেত।’’ গত কয়েক দিন ধরে জয়ন্তের ঘনিষ্ঠ রাহুল গুপ্তকে খোঁজাখুঁজি করছিল পুলিশ। শুক্রবার রাতে তাঁকে আলমবাজার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। আড়িয়াদহে দুই গোষ্ঠীর বচসার জেরে মা এবং ছেলেকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত এই রাহুল। একই ঘটনায় জয়ন্তকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন রাহুল এবং রঞ্জিতের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দক্ষিণেশ্বর থেকে রথতলা এলাকায় যাঁরা অটো চালান। অটোচালকদের অভিযোগ, আড়িয়াদহ দোলপিঁড়ি এলাকায় জয়ন্তের চালু করা টোটো স্ট্যান্ডের চালকেরা অটোচালকদের উপর অত্যাচার করত। অটোয় যাত্রী তুলতে গেলে তাঁদের জবরদস্তি করে নামিয়ে দেওয়া হত। ওই টোটোচালকদের ‘মদতদাতা’ ছিলেন জয়ন্ত এবং তাঁর ঘনিষ্ঠরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোচালকের কথায়, ‘‘আমরা দক্ষিণেশ্বর-রথতলা রুটে অটো চালাই। আদ্যাপীঠ-রথতলার যে অটো-টোটো স্ট্যান্ড রয়েছে, তার মাথায় আছে জয়ন্ত সিংহ। ওই স্ট্যান্ডের প্রেসিডেন্ট হল জয়ন্তের সঙ্গী রাহুল গুপ্ত। রাহুল আমাদের উপর অত্যাচার চালাত। এ বার দোলের দিন যাত্রী তোলার সময় রঞ্জিত আমাদের এক অটোচালককে মারধর করে। ওদের জন্য আমরা সবাই আতঙ্কিত।’’ জয়ন্তের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এলাকায় খোঁজ মিলছে না রঞ্জিতের। তাঁর পরিবারের লোকজন জানাচ্ছেন, বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু, তাঁকে পাওয়া যায়নি।