সুমিত্রা সাহা। নিজস্ব চিত্র
ডেঙ্গি আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যু হল হাবড়ায়। মঙ্গলবার সকালে হাবড়া পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আশুতোষ কলোনি এলাকার বাসিন্দা সুমিত্রা সাহা (৫৭) মারা গিয়েছেন বারাসত জেলা হাসপাতালে। হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই মহিলার মৃত্যুর কারণ, কার্ডিয়াক ফেলিয়োর (হৃদযন্ত্র বিকল)। তাঁকে আইসিসিইউয়ে রেখে চিকিৎসা করা হয়েছিল।’’
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি। প্যারাসিটমল খেয়ে জ্বর না কমায় স্থানীয় চিকিৎসককে দেখান। ডেঙ্গি পরীক্ষা করানো হয়। তাঁর ছেলে, পীযূষ বলেন, ‘‘রিপোর্ট ডেঙ্গি পজ়িটিভ ছিল।’’ ১৭ সেপ্টেম্বর সুমিত্রাকে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। নিয়ে যাওয়া হয় আরজিকর হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক সুমিত্রাকে ইউএসজি করাতে বলেন। তিনদিনের ওষুধ দেওয়া হয়। বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয় তাঁকে।
রবিবার রাতে ফের শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। এবার নিয়ে যাওয়া হয় বারাসত জেলা হাসপাতালে। মঙ্গলবার সকালে সেখানেই মৃত্যু হয়।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আশুতোষ কলোনি এলাকায় কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে তাঁরা সুস্থ আছেন। পুরসভার পক্ষ থেকে মশা মারার তেল স্প্রে করা হচ্ছে। ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার। ঝোপ-জঙ্গল সাফ করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, রেলের একটি পুকুর আছে এখানে। সেটি পরিস্কার হয় না। আবর্জনায় ভর্তি থাকে। এর ফলে মশার উপদ্রব শুরু হয়েছে।
স্থানীয় বিজেপি নেতা বিপ্লব হালদারের অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকার সব কিছুতেই তথ্য গোপন করে। এমনকী, ডেঙ্গি নিয়েও এখন তথ্য গোপন করছে। এ ঘটনা আগেও ঘটেছে। হাবড়া পুরসভা ডেঙ্গি রুখতে উদাসীন। নিয়মিত মশা মারতে তেল স্প্রে করছে না। সাফাই কর্মীদের কাজেও নজরদারি নেই।’’
পুরপ্রধান নারায়ণ সাহার দাবি, সুমিত্রার ডেঙ্গি হলেও তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। মৃত্যু হয়েছে শ্বাসকষ্ট ও হার্টের সমস্যায়। রেলের পুকুর সংস্কার ও পরিস্কার করতে রেল কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কাজ হয়নি। আমরা মশা মারার তেল স্প্রে করছি।’’
হাবড়া এলাকাটি ডেঙ্গিপ্রবণ। অতীতে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিলেন। এ বারও জ্বর ছড়িয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মশার উপদ্রব চলছে। হাবড়া হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, এখন হাসপাতালে ৮ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি আছেন। সকলেই সুস্থ। আক্রান্তেরা হাবড়া, অশোকনগর, গোবরডাঙা এলাকার বাসিন্দা।