Super cyclone

বিশ হাজার পেতে আর ক’মাস, জানেন না ওঁরা

ডাঁসা নদীর বাঁধের পাশে কর্ণধরের বাড়ি। বয়স্ক মানুষটি এখন আর দিনমজুরির কাজ করতে পারেন না।

Advertisement

নবেন্দু ঘোষ 

হিঙ্গলগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:০৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

হিঙ্গলগঞ্জের রূপমারি পঞ্চায়েতের বাইনারা গ্রামে ডাঁসা নদীর বাঁধ ভেঙে আমপানের সময়ে প্লাবিত গ্রামগুলির অন্যতম কেওড়াতলিপাড়া। বাঁধের একদম পাশের এই পাড়ার বাসিন্দারা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। বেশির ভাগ মানুষ বাঁধের উপরে আশ্রয় নেন। গ্রামের অনেকে আমপানে ক্ষতিপূরণের ২০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তবে এখনও কোনও টাকাই পাননি কর্ণধর মণ্ডল।

Advertisement

ডাঁসা নদীর বাঁধের পাশে কর্ণধরের বাড়ি। বয়স্ক মানুষটি এখন আর দিনমজুরির কাজ করতে পারেন না। ছেলে সুব্রত দিনমজুরি করে সংসার চালান। কিন্তু গ্রামে তেমন কাজ নেই। তাই সংসার চালাতে সমস্যা। চাষের জমিও নেই। যেটুকু ছিল, সেখানে কিছু বছর আগে সরকারের দেওয়া টাকায় ঘর তৈরি করেছেন। তবে বাড়ির মেঝে এখনও মাটির। দরজা-জানলা নেই। দেওয়ালে প্লাস্টারও করতে পারেননি।

বাড়ির বৌমা মমতা জানালেন, আমপানের সময়ে তাঁর কোলে একমাসের বাচ্চা। বাড়িতে নদীর জল ঢোকে। ঘরের মধ্যে খাট উঁচু করে তার উপরে ছিলেন সকলে। রান্না বন্ধ ছিল। ত্রাণের শুকনো খাবার খেতেন বেশ কিছু দিন পর্যন্ত। পুকুরের মাছ সব মারা যায়। একাধিক অ্যাসবেস্টস ভেঙেছিল।

Advertisement

তারপরে ক্ষতিপূরণ পেলেন?

পরিবারটি জানায়, পঞ্চায়েত অফিসে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেছিলেন। পরে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক অফিসে গিয়েও আবেদন করেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ আসেনি। ব্লক অফিস থেকে এসে বলে যায়, টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এসেছে। বহুবার ব্যাঙ্কে গিয়ে দেখেছেন কর্ণধর। কিন্তু টাকাই পাননি বলে দাবি।

কর্ণধর বলেন, ‘‘যতবার স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বা পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিই, ততবার শুধু আশ্বাস মেলে। জানি না কবে টাকা আসবে।’’

কেওড়াতলি পাড়ার আর এক বাসিন্দা স্বপন বিশ্বাস। তাঁর মাটির বাড়ি ভেসে গিয়েছিল আমপানে। এখনও বাড়ি নেই। শ্বশুরবাড়িতে ত্রিপল ঘেরা ঘরে থাকেন। স্বপন জানান, বাড়ি থেকে প্রায় কিছুই বের করতে পারেননি। একটা পাওয়ারটিলার ছিল। সেটাও নদীর জলে ডুবে থেকে খারাপ হয়ে গিয়েছে। ছেলে অন্য রাজ্যে কাজ করে। স্বপন বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণের জন্য প্রথমে পঞ্চায়েত অফিসে আবেদন করেছিলাম। তারপরে ব্লক অফিসে। তবে ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও কিছুই পেলাম না। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে বললে বলে বিডিও অফিসে খোঁজ নাও। বিডিও অফিস গেলে বলে, পঞ্চায়েতে খোঁজ নাও।” স্বপন জানান, সরকারি ঘর অবশ্য কিছু মাস আগে পেয়েছেন। সেই ঘর হচ্ছে বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে।

ক্ষতিপূরণ না পাওয়ার বিষয়ে হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্চনা মৃধা বলেন, ‘‘ব্লক জুড়ে কিছু মানুষ এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি জানি। তবে ক্রমশ টাকা ঢুকছে। ক্ষতিগ্রস্তেরা সকলেই টাকা পাবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement