পেট্রাপোলে অমিত শাহ ও শান্তনু ঠাকুর। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক nirmalya pramanik
পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য সাড়ে ৩০ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে বলে জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রবিবার বাংলায় এসে শাহ জানান, কেন্দ্র সরকার দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত করার পাশাপাশি উন্নয়নের সঙ্গে সীমান্ত এলাকাকে এক সূত্রে বাধার কাজও করছে।
এ দিন সকালে পেট্রাপোল সীমান্তে সুসংসহত চেকপোস্ট এলাকায় আসেন শাহ। কলকাতা থেকে হেলিকপ্টারে পেট্রাপোল সংলগ্ন কালিয়ানি বিএসএফ ক্যাম্পে পৌঁছন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখান থেকে সড়ক পথে যশোর রোড ধরে পৌঁছন চেকপোস্ট এলাকায়। রাস্তায় দু’পাশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দেখতে অনেকেই জড়ো হয়েছিলেন। প্রথমে শাহ যাত্রী টার্মিনাল ভবন ও তারপর মৈত্রী দুয়ারের উদ্বোধন করেন। একটি ফটো গ্যালারিও ঘুরে দেখেন তিনি। শাহের সঙ্গেই এ দিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন, বিএসএফের ডিজি দলজিৎ সিংহ চৌধুরী, ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার অধ্যক্ষ আদিত্য মিশ্র।
এ দিন আঠেরো মিনিট বক্তৃতা করেন শাহ। শুরুতেই স্বাধীনতা সংগ্রামী যতীন দাসের জন্মদিনে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। শাহ জানান, ২০১৬-১৭ সালে পেট্রাপোল দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ল্যান্ড পোর্টের পরিকাঠামোর প্রশংসা করে শাহ বলেন, ‘‘ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার কর্তৃপক্ষ এয়ারপোর্টকে এখানে ল্যান্ড পোর্টে নিয়ে এসেছে।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, যাত্রী টার্মিনাল ভবনটি প্রায় ৬০ হাজার বর্গমিটার জুড়ে তৈরি। তা তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা। রোজ ২৫ হাজার যাত্রী সামলাতে পারবে এই টার্মিনাল। তাঁর দাবি, ‘‘যাত্রী টার্মিনাল ভবন তৈরি হওয়ার ফলে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা পর্যটনে গতি আসবে।’’ দেশে আরও ২৩টি স্থলবন্দর তৈরির কাজ শীঘ্রই শুরু হবে বলেও এ দিন জানিয়েছেন শাহ। তিনি বলেন, ‘‘দেশের ১২টি স্থলবন্দরের পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে। ২০২৩-২৪ সালে ১২টি স্থলবন্দর দিয়ে বাণিজ্য হয়েছে ৭১ হাজার কোটি টাকার।’’ সব ক’টি স্থলবন্দরের কাজ ডিজ়িটাল পদ্ধতিতে হতে চলেছে বলেও জানান শাহ।
দেশের সীমান্ত সুরক্ষিত করার সঙ্গে সঙ্গেই উন্নয়নের সঙ্গে সীমান্ত এলাকাকে জোড়ার কাজও কেন্দ্র করছে বলে এ দিন দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করে বলেন, ‘‘দেশের বিকাশ এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ানোর ক্ষেত্রে ল্যান্ড পোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া কাজ করছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে এক সূত্রে বাধার কাজ করছে, চোরাচালান বন্ধের কাজও করছে।’’
পেট্রাপোল দক্ষিণ এশিয়ার সব থেকে বড় স্থলবন্দর বলে দাবি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে স্থলপথে বাণিজ্যের ৭০ শতাংশই হয় এই বন্দর দিয়ে। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে বাণিজ্য বাড়ার সঙ্গে পরিবহণ ক্ষেত্রে, গুদামে পণ্য ওঠানো নামানোর কাজ বাড়বে। প্রায় ২৪ লক্ষ যাত্রীও ২০২৩-২৪ সালে এই বন্দর দিয়ে যাতায়াত করেছেন। এর ফলেও মানুষের রোজগার বাড়ছে।’’