রতন ঘোষ-সহ বিজেপি-তে যোগদানকারীরা—নিজস্ব চিত্র।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই প্রতারণার অভিযোগ উঠল তৃণমূল-ত্যাগী রতন ঘোষের বিরুদ্ধে। চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হল বনগাঁ ও গোপালনগর থানায়।
শনিবার রতনের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতা গোপাল শেঠ। গোপালের অভিযোগ, রতন ঘোষ চাকরি দেওয়ার নাম করে ‘নীলদর্পণ’ নাটকের লেখক দীনবন্ধু মিত্রের পরিবারের সদস্য সুশীল মিত্রের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু তিনি চাকরি দেননি। এই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল ছাড়ার জন্যই রতনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনছেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনার কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ।
বনগাঁ থানায় রতন ঘোষের বিরুদ্ধে দু’টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রথম মামলাটি করেন চৌবেড়িয়ার বাসিন্দা সুশীল কুমার মিত্র। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে ছেলের স্কুল সার্ভিস কমিশনে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে চার লক্ষ টাকা নিয়েছেন রতন। কিন্তু ছেলে চাকরি পায়নি।’’ এ ছাড়া একই অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের হয়েছে বনগাঁ থানায়। শুধু বনগাঁ নয়, গোপালনগর থানায়ও দু’টি পৃথক মামলা দায়ের হয়েছে রতনের বিরুদ্ধে। সেক্ষেত্রেও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অবশ্য খারিজ করেছেন সম্প্রতি বিজেপিতে আসা রতন। তিনি বলেন, ‘‘এতদিন আমি ভালো ছেলে ছিলাম। যেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছি বলা হচ্ছে, আমার মতন দুর্নীতিগ্রস্ত লোক আর নেই। এর বিচার মানুষ করবে।’’
উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি ৪৫ নম্বর জেলাপরিষদ আসন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন বনগাঁর বাসিন্দা রতন। পরে তিনি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের খাদ্য ও খাদ্য সরবরাহ কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে নির্বাচিত হন। কিছুদিন ধরে দলের সঙ্গে তাঁর মতপার্থক্য তৈরি হয়েছিল। তার জেরে খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি। একইসঙ্গে ছেড়ে দেন তৃণমূলের সদস্য পদও। গত বুধবার বনগাঁর গোপালনগরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় রতনের অনুপস্থিতির পরেই তাঁকে নিয়ো চর্চা শুরু হয়। অবশেষে শুক্রবার বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগদান করেন রতন।