যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন অশোকনগরের ‘বৃদ্ধা’। —প্রতীকী চিত্র।
ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় অনিন্দ্য দত্তের। সেটা ২০১৯ সাল। এক মাত্র সন্তানকে অকালে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন দত্ত দম্পতি। শোকে পাথর হয়ে যান ৫৪ বছরের রূপা দত্ত। একাকিত্ব এবং মানসিক কষ্ট কুরে কুরে খাচ্ছিল বৃদ্ধ দম্পতিকে। ৭০ বছরের তপন দত্ত এবং ৫৪ বছরের বুঝলেন এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকতে হলে হলে তাঁদের সন্তান দরকার। কিন্তু এই বয়সে সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে বাধা হয়ে দাঁড়ায় শারীরিক অসুবিধা। অবশেষে সমস্যার সমাধান হয়েছে। আবার বাবা এবং মা ডাক শোনার অপেক্ষায় দত্ত দম্পতি।
হাওড়ার বালি এলাকার এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন ওই দম্পতি। কিন্তু গর্ভধারণের পর একাধিক শারীরিক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় রূপাকে। প্রসবের সময় যখন আসন্ন চিকিৎসক জানিয়ে দেন তিনি এই প্রসব করতে পারবেন না। অকূলপাথারে পড়়েন দম্পতি। এদিক ওদিক ছোটার পর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় রূপাকে। অবশেষে যমজ সন্তানের জন্ম দিলেন রূপা। তাদের একটি ছেলে এবং অন্যটি মেয়ে।
পরিবার সূত্রে খবর, গত ১০ অক্টোবর যমজ শিশুর জন্ম দেন রূপা। তার পর শারীরিক কারণে টানা হাসপাতালে ছিলেন। অবশেষে বুধবার শিশুদের নিয়ে তাঁদের অশোকনগর কাকপুল নয়া সমাজের বাড়িতে আসেন দত্ত দম্পতি। এখন সন্তানেরা এবং মা তিন জনেই সুস্থ আছেন। রূপা বাড়িতে পৌঁছনো মাত্র উৎসবের মেজাজ পাড়ায়। শিশু এবং মাকে ফুল দিয়ে, শঙ্খ ধ্বনি করে বরণ করেন পরিবারের সদস্যরা।
ওই পরিবারের সদস্য শ্রীপর্ণা দত্তের কথায়, ‘‘এই আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই খুব খুশি। তবে নতুন সদস্য যে দু’জন হবে সেটা ভাবিনি। এটা যেন উপরি পাওনা।’’ আর সদ্য বাবা হওয়া তপনের কথায়, ‘‘আমার মতো অনেক দুঃখী মানুষ আছেন, যাঁরা দুর্ঘটনায় সন্তানহারা হয়েছেন। আমি বলব, তাঁরাও সাহস করে এগিয়ে আসুন।’’