বাজেয়াপ্ত: ঘি। নিজস্ব চিত্র
ভেজাল ঘি তৈরির বড় চক্রের হদিস পেল বারাসত পুলিশ জেলার এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ (ডিইবি)।
শুক্রবার বিকেলে ডিইবি এবং মছলন্দপুর ফাঁড়ির পুলিশ যৌথ অভিযান চালায় বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার মছলন্দপুর স্টেশন-সংলগ্ন এলাকায়। সেখানে ভেজাল ঘি তৈরি ও বিক্রির কারবার চলছিল। টিনের ছাউনি এবং টিন দিয়ে চারপাশ ঘেরা একটি ঘরে চলত ওই কারবার। সেখানকার দুই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, এখানে রং, সুগন্ধী, রাসায়নিক, বনস্পতি, বিভিন্ন পাউডার মিশিয়ে ভেজাল ঘি তৈরি করা হত।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম রাজু সর্দার ও বাপ্পা ঘোষ। বাড়ি হাবড়ায়। তাদের জেরা করে বেআইনি কারবারের জাল কত দূর গড়িয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। সিল করে দেওয়া হয়েছে ঘরটি। প্রচুর কেমিক্যাল, সুগন্ধী ভেজাল ঘি, ফাঁকা জার ও লেভেল-স্টিকার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ডিইবি-র ইন্সপেক্টর তপনকুমার বসাক জানান, ‘‘ওই কারবার সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে চলছিল। কারবারের মূল মাথা মহাদেব ঘোষ নামে এক ব্যক্তি। ঘি তৈরির কারবার চালাতে হলে সেখানে ল্যাবরেটরি ও কেমিস্ট থাকা বাধ্যতামূলক। ওখানে তা ছিল না। কোনও সরকারি লাইসেন্সও ছিল না। বাজেয়াপ্ত করা কেমিক্যাল ও সুগন্ধী পরীক্ষার জন্য সরকারি ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন বছর ধরে মছলন্দপুর এলাকায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ভেজাল ঘি তৈরি হচ্ছিল। কয়েক জন মহিলা এবং পুরুষ কর্মী সেখানে কাজ করতেন। স্থানীয় এবং জেলার বিভিন্ন বাজারে ওই ঘি পাইকারি বিক্রি করা হত। দোকানে যা কেজি-প্রতি বিক্রি হত ৬০০ টাকায়।
তদন্তে নেমে ডিইবি জানতে পেরেছে, বিভিন্ন সংস্থার লেভেল দেওয়া স্টিকার এখানকার চক্রটি ব্যবহার করত। বাইরে থেকে তারা ছাপিয়ে নিয়ে আসত। তাতে তারিখ বসানোর জন্য আলাদা মেশিন কেনা হয়েছিল। প্রচুর ভুয়ো লেভেল, স্টিকার, ওজন যন্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।