এ ভাবেই তৈরি হচ্ছে ‘মাস্ক-পট’।
ছাদের কার্নিশ থেকে পর পর ঝুলছে বেশ কয়েকটি মাস্ক। তার কোনওটার মধ্যে থেকে উঁকি দিচ্ছে হলুদ-লাল ফুল, আবার কোনওটা থেকে বেরিয়ে আছে চন্দ্রমল্লিকার চারা। ফেলে দেওয়া মাস্ককে কাজে লাগিয়ে এ ভাবেই ফুল চাষ করেছেন দক্ষিণ বারাসতের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক চিত্তরঞ্জন নস্কর। নাম দিয়েছেন ‘মাস্ক-পট।’
করোনা পরিস্থিতিতে বদলে গিয়েছে মানুষের জীবনযাত্রা। অন্য নানা পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই সর্বক্ষণের সঙ্গী হয়ে উঠেছে মাস্ক। নানা ধরনের মাস্ক মিলছে বাজারে। এর মধ্যে কোনওটা একবার ব্যবহার করেই ফেলে দিতে হচ্ছে। কোনওটা ভাল করে ধুয়ে ব্যবহার করা যাচ্ছে কয়েকবার। ব্যবহারের মেয়াদ ফুরোলে বেশিরভাগ মাস্কেরই জায়গা হচ্ছে রাস্তাঘাটে বা ডাস্টবিনে। মেয়াদ উত্তীর্ণ সেই মাস্কই চিত্তরঞ্জন ব্যবহার করেছেন ফুলের টব হিসেবে।
শিক্ষকতার পাশাপাশি বরাবরই গাছপালার শখ চিত্তরঞ্জনের। বাড়ির ছাদেই গড়ে তুলেছেন বাগান। সম্প্রতি সেই ছাদের বাগানে টবে স্ট্রবেরি ফলিয়েছিলেন তিনি।
তবে আপাতত তাঁর ধ্যান জ্ঞান এই মাস্ক-পট। প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব, পরিচিতদের উৎসাহ দিচ্ছেন মাস্ক পট তৈরির জন্য।
চিত্তরঞ্জনের কথায়, “রাস্তাঘাটে, পুকুরে সব জায়গায় ব্যবহৃত মাস্ক পড়ে থাকতে দেখেই ভাবনাটা মাথায় আসে। নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের ব্যবহৃত কয়েকটি মাস্ক ছিল। তা ছাড়া, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভালভ যুক্ত মাস্ক পরতে বারণ করায় কিছু মাস্ক বাতিল হয়ে গিয়েছিল। সেগুলি জীবাণুমুক্ত করে তাতেই ফুল চাষ শুরু করি। পরিচিতদের অনেকেই আমার কাজে উৎসাহিত হয়েছেন।”
চিত্তরঞ্জন জানান, মাটির বদলে মাস্ক পটে নারকেল ছোবরার গুঁড়ো ও কেঁচো সারের মিশ্রণ ব্যবহার করা ভাল। এতে পটের উপরে বেশি ভার পড়বে না। পাশাপাশি কেঁচো সার থাকায় জলও লাগবে কম। সামান্য জল স্প্রে করে দিলেই কাজ হবে। তবে কেউ চাইলে মাটি ব্যবহার করেও মাস্ক-পটে ফুল চাষ করতে পারেন।
আপাতত মাস্ক পটে কিছু বাহারি ফুল চাষ করেছেন তিনি। ফুল ফুটতেও শুরু করেছে।
কয়েকটি পটে চন্দ্রমল্লিকার চারা তৈরি করেছেন। শীতের মরসুমে সেই চারাই মাটিতে বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
চিত্তরঞ্জনের কথায়, “মাস্ক তো এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস। কিন্তু ব্যবহারের পরে ফেলে দিলে পরিবেশ নষ্ট হবে। তার বদলে ভাল করে ধুয়ে নিয়ে এই মাস্কেই ফুল ফোটানো সম্ভব। ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে মাস্ক-পট নজর কাড়বে।’’