পুলিশের গাড়িতে ওঠার আগে। —নিজস্ব চিত্র।
নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ‘এমবিবিএস’ ডিগ্রিধারী চিকিৎসক বলে। কিন্তু তাঁর প্যাডে সেই ডিগ্রির উল্লেখ ছিল না। যা দেখতে পেয়ে সোমবার বিকেলে উত্তেজনা ছড়ায় গোপালনগর থানার কদমতলা এলাকায়।
গ্রামবাসীরা ভুয়ো চিকিৎসক সন্দেহে মোবারক মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি ও তাঁর সহযোগী ফারুক আহমেদকে ক্লাবঘরে আটকে রাখেন। পুলিশ উদ্ধার করতে গেলে বিক্ষোভের মুখে পড়ে। গ্রামের মানুষ ‘ভুয়ো চিকিৎসকের’ শাস্তি দাবি করেন। রোগীদের কাছ থেকে যে টাকা তিনি নিয়েছিলেন, তা-ও ফেরতের দাবি ওঠে। ক্লাবঘর থেকে ওই চিকিৎসক ও তাঁর সহযোগীকে পুলিশ গাড়িতে তুলতে গেলে জনতা দু’জনকেই মারধর করে। পুলিশ কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে আসে। পরে দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানায়, মোবারক আমডাঙার বাসিন্দা। তিনি নিজের এমবিবিএস ডিগ্রি দেখাতে পারেননি। তিনি ভুয়ো ডিগ্রি দেখিয়ে চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন, দাবি পুলিশের।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগে মোবারক নিজেকে ‘এমবিবিএস’ পরিচয় দিয়ে কদমতলায় একটি ক্লাব সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ওই এলাকায় একটি মেডিক্যাল ক্যাম্পের আয়োজন করবেন বলে জানান। মাইকে প্রচারের ব্যবস্থা করেন। ‘বড় ডাক্তারবাবু’ ক্যাম্প করছেন জানতে পেরে অনেকে ভিড় করেন।
সোমবার সকালে ক্যাম্প বসে। রোগীদের থেকে ২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। ওষুধ বিক্রি করে অনেকের থেকে ১৫০০-১৮০০ টাকা নেওয়া হয় বলেও জানালেন অনেকে।
এ দিকে, কয়েকজন রোগীর নজরে আসে, চিকিৎসক নিজেকে ‘এমবিবিএস’ বলে দাবি করলেও সেই ডিগ্রির উল্লেখ নেই তাঁর প্রেসক্রিপশনের প্যাডে। ক্লাবের কিছু সদস্য ও এলাকার মানুষ মোবারকের কাছে বিষয়টি জানতে চান। তিনি কোনও স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। এরপরেই উত্তেজনা ছড়ায়।
ওই ব্যক্তির প্যাডে লেখা আছে তাঁর হাড়োয়া, খিদিরপুর, নিউ টাউন, মাধবপুরে চেম্বার আছে। ‘ডিসিএমএস, ইডিপি, বিআইএএমএস’-সহ নানা ডিগ্রির উল্লেখও আছে। সেগুলি সম্পর্কে খোঁজ-খবর করছে পুলিশ। তবে ‘এমবিবিএস’ ডিগ্রির উল্লেখ নেই।