প্রতীকী ছবি।
রাতের শহরতলি। তার মধ্যে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। পথঘাট শুনশান। শ্যামনগরের আতপুরে একটি এটিএমে টাকা ভরতে ঢুকেছিলেন বেসরকারি সংস্থার এক কর্মী এবং সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী। বাইরে দাঁড়িয়েছিল গাড়ি। এটিএম থেকে বেরিয়ে এসে তাঁরা দেখেন, গাড়ি নিয়ে উধাও চালক। গাড়িতে একটি ট্রাঙ্কে প্রায় ৮৫ লক্ষ টাকা ছিল। বুধবার রাতের ঘটনা। বেশি রাতের দিকে বীজপুরে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত চালক বা খোয়া যাওয়া টাকার অবশ্য হদিশ মেলেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটির এটিএমে টাকা ভরার কাজ করে। বৃহস্পতিবার লকডাউন বলে বুধবার রাতে এটিএমগুলিতে বেশি পরিমাণে টাকা ভরা হচ্ছিল। ফলে গাড়িটিতে বেশি পরিমাণে টাকা মজুত ছিল। গাড়িতে একজন টেকনিশিয়ান, একজন বন্দুকধারী নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। রাত ১০টা নাগাদ গাড়িটি শ্যামনগরের আতপুরে থামে। নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়ে ব্যাঙ্কে টাকা ভরতে যান ওই কর্মী। একটি ট্রাঙ্ক তাঁরা সঙ্গে নিয়ে ঢুকেছিলেন। অন্য ট্রাঙ্কটি ছিল গাড়ির মধ্যে। টাকা ভরে ওই দুই কর্মী এটিএম থেকে বেরিয়ে দেখেন, গাড়ি উধাও।
দুই কর্মী ফোন করেন নিজেদের সংস্থার অফিসে। তাঁদের পরামর্শে যান জগদ্দল থানায়। সেখানে চালকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। রাতে বীজপুর থানার পুলিশ রাস্তার ধারে গাড়িটিকে পরিত্যক্ত অবস্থায় খুঁজে পায়। টাকার ট্রাঙ্কটি থাকলেও সেটি খালি ছিল। জগদ্দল থানার পুলিশ গাড়িটিকে নিয়ে এসেছে। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটি ব্যক্তিগত। তার কোনও বাণিজ্যিক অনুমোদন নেই। এই গাড়িটি টাকা নিয়ে যাওয়া বা ভরার কাজে নিয়মিত ব্যবহারও হত না। গাড়ির মালিকের বাড়ি বীজপুরে। গাড়ির চালকের বাড়ি নদিয়ার গয়েশপুরে। দীর্ঘদিন ধরেই সে ওই সংস্থার গাড়ি চালাচ্ছে। জগদ্দল থানার পুলিশ চালকের বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তার কোনও খোঁজ মেলেনি।
পুলিশ জানিয়েছে, চালকের খোঁজ চলছে। পুলিশ মনে করছে, আগে থেকেই পরিকল্পনা করেই এই কাজ করেছে চালক। আগে থেকেই সে পালানোর ব্যবস্থা করে রেখেছিল। বীজপুরে নিশ্চয়ই কোনও যানবাহন রাখা ছিল। যাতে উঠে সে টাকা নিয়ে পালায়। বাকি দুই কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তাঁদের ভূমিকাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (সাউথ) অজয় ঠাকুর বলেন, “পুলিশ সব রকম ভাবে চালককে খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে। খুব শীঘ্রই সে ধরা পড়বে।”