Electrocution

‘বেআইনি’ সংযোগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট, মৃত দম্পতি

বাসিন্দারাও জানান, পরিত্যক্ত জমির মধ্যে দিয়ে এমন ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছিল, যাতে নজরে না পড়ে। এর পিছনে শাসক দলের একাংশের মদত ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৬:৪০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

তড়িদাহত হয়ে এক দম্পতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠল। ব্যারাকপুর কমিশনারেট এলাকার মোহনপুর থানার নাভারন্ডের বাসিন্দা ওই দম্পতির নাম মদন মণ্ডল (৫৫) এবং রুমা মণ্ডল (৪৩)।

Advertisement

স্থানীয় শিউলি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সোমা মালিক জানান, চাষের খেতে কীটনাশক ছড়িয়ে মঙ্গলবার দুপুরে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময়ে মদনের কাঁধে থাকা কলার কাঁদিতে সম্ভবত টান পড়েছিল বেআইনি বিদ্যুৎবাহী তারে। সেটি ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। পিছনেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী। তড়িদাহত স্বামীকে মাটিতে পড়ে ছটফট করতে দেখে তিনি সম্ভবত তাঁকে হাত ধরে টেনে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন। দু’জনকেই বারাসত হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। দেহ দু’টি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

কিন্তু কী ভাবে চাষের খেতের মেঠো পথে বিদ্যুৎবাহী তার এল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর চারেক আগে বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে পাম্প চালিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে চাষের জমিতে দিতেন দত্তপোলের বাসিন্দা, সুশান্ত জানা নামে এক ব্যবসায়ী। তিন বছর ধরে তিনি ওই জমিতে চাষ না করলেও নিজের বাড়ি থেকে টানা বিদ্যুতের তার খোলেননি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রোদে-জলে তারের রবারের সেফটি খোল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। বৃষ্টিতে আলপথে আগাছা গজানোয় দম্পতি আড়ালে থাকা তারটি হয়তো দেখতে পাননি। তাঁদের পড়ে থাকতে দেখে এলাকারই এক বৃদ্ধা চিৎকার করে সকলকে ডাকেন। স্থানীয়েরা ওই দম্পতিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে যান, সেই সুযোগে বেআইনি সংযোগ খুলে অভিযুক্ত পালান বলেও বাসিন্দারা দাবি করেন।

Advertisement

মৃত দম্পতির ছেলে শুভাশিস বলেন, ‘‘সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বাবা-মা আনাজ খেতে কীটনাশক ছড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা চাই, সুশান্ত জানার বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ বিভাগ ও প্রশাসন আইনি পদক্ষেপ করুক।’’ বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি দফতরের নজরে ছিল না বলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার স্থানীয় আধিকারিকেরা জানিয়েছেন।

বাসিন্দারাও জানান, পরিত্যক্ত জমির মধ্যে দিয়ে এমন ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছিল, যাতে নজরে না পড়ে। এর পিছনে শাসক দলের একাংশের মদত ছিল বলেও অভিযোগ উঠেছে। বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগের জেরে একসঙ্গে দু’জনের মৃত্যুর ঘটনার পরেও সুশান্তের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় তেমনই ইঙ্গিত পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন। বিদ্যুৎ দফতরের পক্ষ থেকে আজ, বুধবার ওই জায়গাটি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement