সাহায্য: মহিলার শুশ্রূষায় চার বন্ধু। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা
চার কলেজ ছাত্রের তৎপরতায় চিকিৎসা পেলেন অসুস্থ এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা।
বিগত দশ বারো দিন ধরে বছর চল্লিশের অসুস্থ এক মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা বাসন্তীর সোনাখালি বাজার এলাকায় ছিলেন। মহিলার বাঁ পায়ে গভীর ক্ষত রয়েছে। চিকিৎসা না করানোর ফলে সেখানে পচন ধরেছে।
অবাঙালি ওই মহিলার কথা এলাকার কেউ সে ভাবে বুঝতে পারছিলেন না। কেউ এগিয়েও আসেননি। শনিবার বিষয়টি নজরে আসে চার বন্ধুর। তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন, ওই মহিলাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবেন তাঁরা। মোতাবেক আজগর সর্দার, ভূপতি কয়াল, ফারুক সর্দার ও নারায়ণ মাইতি রবিবার ওই মহিলাকে সোনাখালি বাজার থেকে নিয়ে আসেন বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। নোংরা ও ছেঁড়া শাড়ি পরেছিলেন ওই মহিলা। ছাত্রেরাই নতুন পোশাক কিনে দেন। এলাকার এক মহিলার সাহায্যে তাঁকে স্নান করিয়ে, খাইয়ে হাসপাতালে হাজির হন চার বন্ধু। চিকিৎসকেরা প্রাথমিক ভাবে দেখে বলেন, ‘‘মহিলা ভারসাম্যহীন। দুর্ঘটনার ফলে পায়ে আঘাত লেগেছিল তাঁর। ঠিকমতো চিকিৎসা না হওয়ায় সেখানে পচন ধরেছে।’’ ভাষাগত সমস্যার কারণে ওই মহিলার কথা বুঝতে পারছেন না এলাকার কেউ। তবে এটুকু বোঝা গিয়েছে যে, তিনি পথ ভুলে বাসন্তীতে চলে এসেছেন। ছত্তীসগঢ়ে বাড়ি। নিজের নাম শামো ও স্বামীর নাম রমেশ বলে জানিয়েছেন। ফারুক, ভূপতিরা বলেন, “দিনের পর দিন রাস্তার পাশে পড়ে থেকে কষ্ট পাচ্ছিলেন মহিলা। তা দেখেই আমরা চার বন্ধু ওঁকে চিকিৎসা করাতে উদ্যোগ করি। মহিলা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠুন, বাড়ি ফিরুন— সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’’
বাসন্তীর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈকত বেরা বলেন, “মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। পায়ে গভীর ক্ষত রয়েছে। ওঁর প্রাথমিক চিকিৎসা আমরা এখানে করেছি। কিন্তু ওঁর মানসিক রোগের চিকিৎসা ও পায়ের অস্ত্রোপচারের জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ মহিলার পরিচয় কী ভাবে পাওয়া যেতে পারে, তা ভাবনাচিন্তা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় অনেকের মতে, এ ক্ষেত্রে হ্যাম রেডিয়োর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।