বাঘরোল সংরক্ষণে জোর। —প্রতীকী চিত্র।
রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের জন্য সুন্দরবনের মূল পরিচিতি হলেও আরও অন্য বণ্যপ্রাণীর বসবাস এখানে। কিন্তু সচেতনতার অভাবে বহু প্রাণীই আজ বিলুপ্ত হওয়ার পথে। এমনই একটি লুপ্তপ্রায় প্রাণী হল বাঘরোল। বেশ কয়েক বছর ধরে বিপন্ন বাঘরোলকে বাঁচাতে উদ্যোগী হয় সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প। এ বার বাংলায় প্রথম বাঘরোল সুমারির কাজ শুরু করল তারা৷ সম্প্রতি বাঘ সুমারির সময় গভীর অরণ্যের বিভিন্ন জায়গায় বসানো হয়েছিল ক্যামেরা। সেই ক্যামেরাতেই ধরা পড়েছে বাঘরোলের ছবি। সে সব ছবি পর্যালোচনা করে সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীন জঙ্গলে প্রায় ৩৬৫টি বাঘরোল চিহ্নিত করা গিয়েছে বলে দাবি বনাধিকারিকদের।
বন দফতর সূত্রে খবর, বাঘ গণনার জন্য ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধীনে সুন্দরবনের জঙ্গলের বিভিন্ন এলাকায় মোট ৫৭৩টি ক্যামেরা বসানো হয়েছিল। তার মধ্যে বসিরহাট রেঞ্জ থেকে ১৪৪, সজনেখালি ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারিতে ১২০টি, ন্যাশনাল পার্ক (পূর্ব)-এ ৭৪টি এবং ন্যাশনাল পার্ক (পশ্চিম)-এ ১২০টি বাঘরোল চিহ্নিত হয়েছে।
সুন্দরবনের পাখিরালার বাবলাতলায় বন্যপ্রাণপ্রেমী সংগঠন ‘শের’-এর উদ্যোগে তৈরি হয়েছে একটি কমিউনিটি সেন্টার। ‘বাঘ বন’ নামে ওই কমিউনিটি সেন্টারে ‘মানুষ ও বন্যপ্রাণ সংঘাত’ নিয়ে বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিল রবিবার। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের সহ-ক্ষেত্র অধিকর্তা জোনস জাস্টিন। বাঘরোল গণনা নিয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেন তিনি। বলেন, ‘‘সুন্দরবন মানে শুধু বাঘ নয়। অন্য পশুপাখিও রয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম বাঘরোল। পশ্চিমবাংলায় প্রথম এই প্রাণীটির সুমারির কাজ হল৷’’
ওই কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায়, পরিবেশবিদ অনিন্দিতা মজুমদার প্রমুখ। এই বিষয়ে রাজ্য বন্যপ্রাণ উপদেষ্টা পর্যদের সদস্য তথা ‘শের’-এর কর্ণধার জয়দীপ কুণ্ডু বলেন, ‘‘যৌথ বন পরিচালন ব্যবস্থার মাধ্যমে বাঘ ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে কাজ করি আমরা। বন দফতর এবং প্রান্তিক মানুষের মাঝে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুন্দরবনের উন্নতির জন্য কাজ করছি। মানুষ এবং জীববৈচিত্র্যের মধ্যে সমতা রক্ষাই আমাদের দায়িত্ব।’’