টাকা লুটে ধৃতেরা। ছবি: প্রসেনজিৎ সাহা।
নিজের মেয়ে ও প্রেমিককে সঙ্গে নিয়ে দেওরের ঘরে লুটপাটের নাটক ফেঁদেছিল এক মহিলা। জেরায় মেয়ে সব কথা খুলে বলে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ গ্রেফতার করে ওই মহিলা ও তার সঙ্গীকে। গ্রেফতার হয়েছে মহিলার মেয়েও। পুলিশের দাবি, সকলেই অপরাধ কবুল করেছে। লুটের ১০ লক্ষ টাকাও উদ্ধার হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় ক্যানিংয়ের দিঘিরপাড় গ্রামের ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করেছিল মহিলা ও তার সঙ্গীকে। পরে ধরা হয় বছর একুশের তরুণী মেয়েকেও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাপি মোল্লা নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল দিঘিরপাড়ের বাসিন্দা, স্বামীবিচ্ছিন্না সারথী প্রামাণিকের। অন্যত্র জমি কিনে নতুন করে বাপির সঙ্গে সংসার পাতবে বলে ঠিক করে সারথী। জমি কেনার টাকা জোগাড় হবে কী করে? সারথীদের পাশের ঘরে থাকেন তার দেওর বিমল প্রামাণিক। তিনি সেলুন চালান। প্রায় ১০ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন নিজের আলমারিতে। সেই টাকা হাতানোর ছক কষে সারথীরা।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রাখির হাত-পা, মুখ বেঁধে দেওরের আলমারি ভেঙে টাকা নিয়ে চম্পট দেয় সারথী-বাপি। রাখি গ্রামবাসীদের জানায়, অন্যদের অনুপস্থিতিতে বাড়িতে ঢুকে তাকে বেঁধে রেখে লুটপাট চালিয়ে পালিয়েছে কয়েক জন দুষ্কৃতী।
আইসি ক্যানিং সৌগতকুমার ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। রাখিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা। কথায় কিছু অসঙ্গতি থাকায় তাকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় ভেঙে পড়ে রাখি। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সারথী ও বাপিকে ভাঙড় মাছবাজার থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ধৃতদের মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে সকলকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এসডিপিও ক্যানিং রামকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘ডাকাতির নাটক করে টাকা হাতানোর চেষ্টা করেছিল তিন জন। পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে টাকা উদ্ধার করেছে। সত্য উদঘাটন হয়েছে।’’ লুটের টাকা ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে লুটের কাজে ব্যবহৃত ড্রিল মেশিন, কাটার, দড়ি, ওড়না সহ বেশ কিছু সামগ্রী। একটি মোবাইলও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
বিমল বলেন, "ভাবতেই পারছি না, বৌদি-ভাইজিরা আমার সঙ্গে এ রকম ঘটনা ঘটাতে পারে!’’