Smugglers Arrested

‘প্রেস স্টিকার’ সাঁটানো গাড়িতে মাদক পাচার, ধৃত

বনগাঁ মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হামেশাই দেখা যায়, প্রেস স্টিকার লাগানো বাইক, গাড়িতে ঘুরছে।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৬
Share:

এই সেই গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

অভিযোগ উঠছিল দীর্ঘ দিন ধরে। এ বার ‘প্রেস স্টিকার’ লাগানো গাড়ি থেকে উদ্ধার হল তরল মাদক, কোডেইন মিক্সচার। ধরা পড়েছে দুই পাচারকারী। শুক্রবার ভোরে গাইঘাটার কুলপুকুর এলাকায় যশোর রোড থেকে পুলিশ তাদের ধরেছে।

Advertisement

এ দিন ভোরে পুলিশ ওই এলাকায় গাড়ি থামিয়ে নাকা তল্লাশি করছিল। বারাসতের দিক থেকে একটি গাড়ি বনগাঁর দিকে আসছিল। গাড়িতে ‘প্রেস স্টিকার’ (সংবাদমাধ্যমে কাজের সূত্রে ব্যবহৃত বা সংবাদর্মীদের গাড়ির সামনে লাগানো থাকে) লাগানো ছিল। সেই সঙ্গে ‘অ্যাডভোকেট’ স্টিকারও লাগানো ছিল। পুলিশ গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। দুই আরোহী নিজেদের সাংবাদিক পরিচয়পত্র দেখাতে পারেনি। এরপরেই পুলিশ গাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তরল মাদক আটক করে।

পুলিশ জানিয়ে, ধৃতদের নাম সুরেশ প্রসাদ এবং শুভম কুমার। তাদের বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। ৮৪০ বোতল তরল মাদক উদ্ধার হয়েছে। তদন্তকারীদের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানিয়েছে, ওই তরল মাদক বাগদা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পাচারের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল।

Advertisement

বনগাঁ মহকুমার মানুষের কাছে এটি নতুন ঘটনা হয়। সীমান্ত এলাকায় বসবারকারী অনেকেই জানাচ্ছেন, বাইক, ছোট গাড়িতে প্রেস স্টিকার লিখে কিছু পাচারকারী গাঁজা, হেরোইন, তরল মাদক, সোনার বিস্কুটও পাচার করছে! অনেকেই এদের দেখে অবাক হন। কারণ, পাড়ায় পাচারকারী বা দুষ্কৃতী হিসাবে লোকজন তাদের চেনেন। এ দিকে, তাদেরই গাড়ি বা বাইকে প্রেস স্টিকার লাগানো থাকে। অনেকের কাছে প্রেস কার্ডও থাকে বলে অভিযোগ। টাকার বিনিময়ে তারা তা সংগ্রহ করে!

বনগাঁ মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ সড়কে হামেশাই দেখা যায়, প্রেস স্টিকার লাগানো বাইক, গাড়িতে ঘুরছে। পাচারকারীদের পাশাপাশি কিছু ব্যবসায়ীও আছেন এই তালিকায়, যাঁদের সঙ্গে সাংবাদিকতার কোনও সম্পর্ক নেই। পাচারকারী গাড়িতে প্রেস স্টিকার লেখে, কারণ এর ফলে পুলিশ০বিএসএফের নজরদারি থেকে বাঁচা যায় বলে মনে করেন বাসিন্দাদের অনেকে।

কিছু মানুষ ইদানীং ইউটিউব চ্যানেল বা ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দেন বলেও নজরে এসেছে। তাঁদের কেউ কেউ নিজেদের সংস্থার আইকার্ড মোটা টাকায় বিক্রি করেন বলে অভিযোগ। অনেক সময়ে প্রেস লেখা গাড়ি পুলিশ আটকালে গাড়িতে থাকা যুবকেরা পরিচিত কোনও সাংবাদিকের নাম নেয়, এমনও অভিজ্ঞতা আছে পুলিশের। এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘সাংবাদিকের সঙ্গে পরিচিতির সূত্রে যেন আইন ভাঙার লাইসেন্স মিলে যায়!’’

পুলিশ জানিয়েছে, প্রেস স্টিকার লাগানো থাকলে অনেক সময়ে সাংবাদিক মনে করে গাড়ি সে ভাবে তল্লাশি করা হয় না। তবে এই যা পরিস্থিতি, তাতে কোনও গাড়িকেই সন্দেহের ঊর্ধ্বে রাখা যাচ্ছে না।

বাসিন্দারা চাইছেন, প্রেস স্টিকার লেখা গাড়ির আড়ালে বেআইনি কার্যকলাপ বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ করুক পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement