নিজস্ব চিত্র।
বিজেপিকে আক্রমণ করে বীরবাহা সোরেন বলেন, ‘‘এত যদি আদিবাসী প্রেম তাহলে ঝাড়খণ্ডের মানুষ আপনাদের তাড়িয়ে দিল কেন?’’
ফিরহাদ হাকিম বললেন, ‘‘আর মাত্র ক’দিনের অপেক্ষা, তার পরেই গোটা বাংলা বলবে, ভাগ মোদী ভাগ! ভাগ অমিত শাহ ভাগ! ভাগ শুভেন্দু ভাগ!’’
মমতাকে বাংলার বাঘিনী বলে সম্বোধন করে আসানসোলের তৃণমূল সাংসদ শত্রুঘ্ন সিন্হা বললেন, ‘‘দেশের সবচেয়ে লড়াকু, সৎ এবং সফল নেত্রীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা দেশের কাছে তিনি মুক্তির সূর্য।’’ জানালেন, মমতা হুইল চেয়ারে বসে বিজেপিকে হারিয়েছেন, মানুষের বিশ্বাস মমতার সঙ্গে।
জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা বলেন, ‘‘২০১৭ থেকে আমি দিদির দেখানো পথেই চলছি। জিটিএ ভোটে জিতে আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি।’’
মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে উত্তর কলকাতার সাংসদ প্রবীণ নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের সমাবেশ থেকে নজর ঘোরাতেই সনিয়াকে তলব ইডির, রাষ্ট্রপতি ভোটের ফল।’’
সভামঞ্চে পৌঁছলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে দেখেই হাততালি দিতে শুরু করেন উপস্থিত তৃণমূল কর্মী সমর্থকেরা। সেই সময় বক্তৃতা করছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু হাততালির দাপটে তাঁকে বলা থামাতে হয়।
নিজস্ব চিত্র।
শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ প্রবীণ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায়ের। বললেন, ‘‘বিজেপির সাম্প্রদায়িক, পুঁজিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে মমতার নেতৃত্বে দেশ লড়ছে।’’
সৌগত বলেন, ‘‘অভিষেকের নেতৃত্বে অন্য রাজ্যেও পা রাখছে তৃণমূল। গোটা দেশ জানে বিজেপির বিকল্প একমাত্র মমতা। মমতাকে উপহাস করে মায়ের ভোগে চলে গিয়েছে সিপিএম। একদিন বিজেপিরও তাই গতি হবে।’’
নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলায় তৃণমূলের শহিদ সমাবেশের মঞ্চে ২১ জুলাইয়ের তাৎপর্য বর্ণনা করছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা সুব্রত বক্সী। ধর্মতলা এলাকায় ইতিমধ্যেই তিল ধারণের জায়গা নেই।
এ দিকে কালীঘাটে নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সভার পথে রওনা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র-সহ অনেকগুলি জায়গায় দূর থেকে আসা তৃণমূল নেতা, কর্মী ও সমর্থকদের থাকার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। গত ৪৮ ঘণ্টা সেখানেই ঘুম, থাকা, খাওয়া সেরেছেন জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দক্ষিণ দিনাজপুরের আম তৃণমূল সমর্থক, কর্মী, নেতারা।
শিয়ালদহ স্টেশন মূলত উত্তরবঙ্গের মানুষের ঢেউয়ে ভেসে গেলেও হাওড়ায় মিশ্র ছবি। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী-সমর্থকেরা ট্রেন ভরে হাওড়ায় এসে নেমেছেন। আবার বাস ভাড়া করে কলকাতামুখী হওয়ার সংখ্যাও কম নয়। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে থেকে বিটি রোড— সর্বত্রই এক ছবি। কাতারে কাতারে মানুষ চলেছেন ধর্মতলার উদ্দেশে।
তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভার প্রস্তুতিপর্ব সাধারণত শুরু হয় সভার অন্তত এক মাস আগে থেকে। রাজ্যের সর্বত্র প্রস্তুতিসভা, মিছিলে গত প্রায় এক মাস ব্যাপী সরগরম বাংলা। উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়িতে এমনই একটি প্রস্তুতিসভায় অংশ নিয়েছিলেন অভিষেক। সেখানে তিনি জানিয়ে দেন, দল পরিচালনায় অতীতে যদি কোনও ভুলত্রুটি হয়ে থাকে, তা আর দেখা যাবে না। ছ’মাসের মধ্যে ‘নতুন’ তৃণমূলকে দেখা যাবে। আরও জানান, এ বার থেকে উত্তরবঙ্গে নিয়মিত দেখা যাবে তাঁকে। সেই সূত্রেই কলকাতাগামী একের পর এক ট্রেন বোঝাই করে উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় পৌঁছেছেন তৃণমূল সমর্থকরা।
দু’বছর প্রযুক্তিনির্ভর সভা হওয়ার পর ২০২২ সালে ধর্মতলার পরিচিত জায়গায় ফিরে এসেছে তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের সভা। ভিক্টোরিয়া হাউজের ঠিক সামনে তৈরি অতিকায় মঞ্চে দাঁড়িয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় কর্মী সমর্থকদের আগামীর দিশা দেবেন। দু’বছর বাদে ধর্মতলায় সভা ফেরাই শুধু নয়, এ বারের ২১ জুলাই আরও কয়েকটি কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
বস্তুত, ২০২১-এর ভোটের পরেই ভার্চুয়াল ২১ সমাবেশের রাশ গিয়েছিল তখন সদ্যনিযুক্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে। মাইক হাতে ভার্চুয়াল সভা পরিচালনা করেছিলেন তিনি। ধর্মতলার সভামঞ্চেও অভিষেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবেন। দলের সর্বময় নেত্রীর পাশাপাশি কী বার্তা দেবেন তিনি?