মমতাকে কটাক্ষ সুকান্ত-সুজনদের। ফাইল চিত্র।
মুড়ি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নাটক করছেন। কোনও কর বসানো হয়নি মুড়িতে। এগুলি সব পূর্বপরিকল্পিত। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘মুড়ির উপর জিএসটি’ প্রসঙ্গে এ ভাবেই পাল্টা জবাব দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
তিনি বলেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে এসে মুড়ির কথা ঘোষণা করলেন, আর সঙ্গে সঙ্গে মুড়ি চলে এল! এ ভাবে কোথাও মুড়ি বিক্রি হয়? পুরো প্ল্যান করে করা। বাংলার মানুষ অত বোকা নন, যথেষ্ট শিক্ষিত। মুখ্যমন্ত্রীকে নাটক করতে বারণ করুন।” সুকান্ত এ প্রসঙ্গে জানান, প্রধানমন্ত্রী গরিবের প্রধানমন্ত্রী বলেই ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দিয়েছেন। পেট্রল-ডিজেলের দাম দু’বার কমিয়েছেন। বুস্টার টিকা বিনামূল্যে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, গরিবের বাড়িও পৌঁছে দিয়েছেন।’’
ধর্মতলার মঞ্চ থেকে ২০২৪-এ বিজেপিকে উৎখাত করার ডাক দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী। মমতা বলেন, “বৃষ্টি দেখে বিজেপি, সিপিএম হেসেছিল। ভেবেছিল তৃণমূলের মিটিংই শেষ হয়ে গেল।” এর পরই হুঁশিয়ারি দিয়ে তৃণমূলনেত্রীর বার্তা, ‘‘২০২৪-এ মানুষের বৃষ্টিতে ভেসে যাবে বিজেপি।’’ এ প্রসঙ্গে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি। তাঁর কথায়, “কিছু দিন আগে পাঁচটি রাজ্যে ভোট হয়েছে, চারটিতে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর আগে তাঁর পার্ষদরা বক্তৃতা দিয়েছেন। সেই ভাষণে তাঁরা না কি মাননীয়াকে ঠেলে দিল্লি পাঠাবেন বলেছেন। এই কথা শুনলে বাচ্চারাও হাসবে।”
অন্য রাজ্যে বিজেপি দল ভাঙাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী। এ প্রসঙ্গে সুকান্তর সাফ জবাব, মুখ্যমন্ত্রী ভয়ে আছেন বলে এ ধরনের কথা বলছেন। এর পরই তাঁর মন্তব্য, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সরকার বিজেপি ভাঙবে না। তাঁর সরকার এমনিতেই ভেঙে যাবে। কারণ, তৃণমূল কংগ্রেস দলটা হরিশ মুখার্জি আর হরিশ ব্যানার্জি। এই দুই রোডে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এই সরকার এমনিই পড়ে যাবে এবং সেটা অল্প কয়েক দিনেই। বিজেপির কিছু করার প্রয়োজন নেই।” বাংলার সরকারের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ বলেও মন্তব্য করেন সুকান্ত।
বাম সরকারের আমলে ১০-১৫ লক্ষ টাকায় চাকরি বিক্রি হত বলে অভিযোগ তুলেছেন মমতা। শুধু তাই নয়, মমতা প্রশ্ন তোলেন, “আপনাদের সময় কাদের বার্থ সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন? সেই ফাইলটা একটু বার করব? কী বলেন বিকাশবাবু! বলেছিলাম, বদলা নয়, বদল চাই। তাই কিছু করিনি।” চাকরি বিক্রির অভিযোগ, আর জন্ম শংসাপত্র নিয়ে মমতার এই মন্তব্যের কটাক্ষ করে সুকান্ত পাল্টা ‘ফিশফ্রাই জোটের’ প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যে ফিশফ্রাই জোটের কথা বলতাম, তা হলে সেটা সত্যিই এখনও বর্তমান। যদি সিপিএম আমলে এ রকম চাকরি বিক্রির অভিযোগ থেকে থাকে, ১১ বছর পর মুখ্যমন্ত্রী তা বলছেন কেন। ক্ষমতায় আসার পর কেন তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করেননি। কেন গ্রেফতার করেননি। তার মানে তলে তলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং কালীঘাট এই দু’জন পরস্পরের হাত ধরে চলছে।”
তৃণমূলের নামে কেউ চাঁদা তুললে সোজা থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানো পরামর্শ দিয়েছেন মমতা। চাঁদা তোলা প্রসঙ্গে সুকান্তর কটাক্ষ, “এ কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই প্রাকারান্তরে মেনে নিচ্ছেন চাঁদা তোলা হয়। ২১ জুলাই কালেকশন ডেট।”
চাকরি বিক্রির যে অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে মমতাকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “মমতার সব দাবি মিথ্যা, ভুল। সাহস থাকলে চিরকুটগুলি বার করুন।”