TMC

Asset of TMC leader: বাড়িতে ২০ লাখি গাড়ি, ‘কার্যত প্রধান’ তৃণমূল নেতা বলছেন, লোকের কথায় কী আসে-যায়

স্ত্রী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। কিন্তু বকলমে কাজ চালান তিনি। বিরোধীদের অভিযোগ, কার্যত প্রধান হিসেবে কাজ করে মানুষটি মোটা টাকা ‘রোজগার’ করেন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২২ ০৬:২৪
Share:

ফাইল ছবি

বিশাল দাওয়ার মাঝে একটি ছোট্ট ঘর। অফিস ঘরও বলা যেতে পারে, আবার আড্ডা ঘরও। জনা কয়েক বসে রয়েছেন। মধ্যমণি এক জনই। বয়স পঞ্চাশের কোঠায়। পরনে লুঙ্গি ও গেঞ্জি। তাঁর পাশেই বেঞ্চের উপরে রাখা একটি কলম, কয়েকটি খাতাপত্র। ‘প্রধান আছেন?’ হাসি হাসি মুখে বললেন, “আরে বলুন না, ধরে নিন আমি প্রধান।” পাশ থেকে এক জন বলে উঠলেন, “আসলে ওঁর স্ত্রী প্রধান। দাদাই সব কাজ করেন। ওঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেন।” হাতজোড় করে নমস্কার করলেন মধ্যমণি মানুষটি। বললেন, “আমাদের এই মৌজা মহিলা আসনের জন্য সংরক্ষিত। তাই আমার স্ত্রী ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছেন। আমার দাঁড়ানোর সুযোগ হয়নি।”

Advertisement

বিরোধীদের অভিযোগ, কার্যত প্রধান হিসেবে কাজ করে এই মানুষটি মোটা টাকা ‘রোজগার’ করেন। তাই তো কুড়ি লক্ষ টাকার গাড়ি কিনেছেন। গ্রামেগঞ্জে যে গাড়ি চট করে দেখা যায় না। প্রশ্ন শুনেই মানুষটির চোয়াল শক্ত। একটু সময় নিলেন। তার পরে হাসি ফিরে এল মুখে। তৃণমূল নেতা কামিনী রায় এর পরে বললেন, “লোকের কথায় কী যায়-আসে বলুন? শখ ছিল, তাই তাই একটা ভাল গাড়ি কিনেছি। কিস্তি দিতে হয় মাসে সাতাশ হাজার টাকা।” গাড়ির দাম নিয়ে চর্চা রয়েছে গ্রামে, তা অস্বীকারও করলেন না।

কামিনী রায় কোচবিহারের সিতাই বিধানসভার মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা। তাঁর স্ত্রী স্বপ্না বর্মণ (রায়) গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান। বাসিন্দাদেরই বেশিরভাগই অবশ্য বলেন, “স্বপ্না তো নামেই প্রধান, সব কাজই করেন তাঁর স্বামী কামিনী রায়।” প্রধানের চেয়ারেও নাকি তাঁকেই বসে থাকতে দেখা যায়। সে সব শুনেও হাসেন তিনি। বাড়ির সামনেই গ্যারাজ ঘর। সেখানেই রাখা আছে নীল রঙের সেই গাড়িটি। গ্রামের রাস্তায় ওই গাড়ি ছুটলে আশপাশ থেকেই অনেকে বলতে থাকেন, “ওই তো প্রধান সাহেবের গাড়ি।” স্বপ্নাকে অবশ্য এই সব অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য পাওয়া গেল না।

Advertisement

রাজ্যের শাসকদলের নেতাদের বাড়ি-গাড়ি নিয়ে এর মধ্যেই প্রচুর আলোচনা হয়েছে। গ্রামগঞ্জে থেকেও দামি গাড়ি হাঁকানো বা পেল্লায় বাড়ি তৈরি করার রেওয়াজ দলে যথেষ্ট। তৃণমূলেরই একটি অংশের দাবি, তেমনই একটি গাড়ি রয়েছে মাতালহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের। যদিও দলেরই অন্য একটি অংশ একটি মোবাইল-বার্তা ভাইরাল করে দাবি করেছেন, ‘শুধু গাড়ি নয়, শহরে সম্পত্তিও রয়েছে ওই প্রধানের। আছে কয়েক কোটি টাকার ব্যাঙ্ক আমানতও’। কামিনী বলেন, “আমি রেশন ডিলার। পৈতৃক কিছু সম্পত্তি পেয়েছি। সব দিয়েই আমার চলে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কেউ কেউ আমাকে বদনাম করার জন্য মিথ্যে কথা ছড়াচ্ছে। আমি তাঁদের চ্যালেঞ্জ করছি, এ সব প্রমাণ করতে না পারলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement