পীযূষ-প্রিয়াঙ্কা। —ফাইল চিত্র।
মিছিলের পথ গিয়ে মিশেছে ছাদনাতলায়। হাঁটতে হাঁটতে হাতের মুঠোয় ধরা পড়েছে অন্য জনের হাত।
বর্ধিত ডিএ-র দাবিতে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনে শামিল দুই প্রাথমিক শিক্ষক পীযূষকান্তি রায় ও প্রিয়াঙ্কা বিশ্বাস এ বার যুগলে ফিরবেন আন্দোলনের মঞ্চে। গত শনিবার তাঁদের বিয়ে ও রবিবার বৌভাতে কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে এসেছেন মঞ্চের সদস্যেরা।
২০১৯ সাল। বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বিকাশ ভবনের কাছে অনশন করছিলেন প্রাথমিক শিক্ষকেরা। অনশন ভাঙার দিনে হাতে যখন শরবত তুলে দিয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা, চোখ তুলে দেখেছিলেন পীযূষ। তখনও সে ভাবে আলাপ হয়নি। আলাপ হল অনেক পরে, মঞ্চের আন্দোলনে এসে।
বর্ধমানের পীযূষ আর নদিয়ার কৃষ্ণনগরের প্রিয়াঙ্কার উচ্ছ্বাস ছিটকে আসছিল ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে। মঞ্চে থাকলেও কথা হত কমই। পীযূষ বলেন, ‘‘আমি নেতৃত্বের কাছাকাছি থাকতাম। সংগঠনের নানা কাজ থাকত। প্রিয়াঙ্কা স্টেজ থেকে অনেকটা দূরে বসত। দৃষ্টি বিনিময় হয়েছে। ভাল লাগার জায়গাটা তৈরি হয় সমবেত গানের সময়ে।’’ অনেকের মধ্যে প্রিয়াঙ্কার গলাটা আলাদা করে ভাল লাগতে শুরু করে পীযূষের। পাশাপাশি পথ চলার সেই শুরু।
আন্দোলন চলাকালীন এই ভাল লাগাটা মন ছুঁয়ে যায় মঞ্চের নেতাদেরও। ভাস্কর, সন্দীপ্তা, সৌগত, নির্ঝর, রাজীবের মতো নেতারা নিজেদের মধ্যেই আলোচনা শুরু করেন, দু’জনকে আর একটু কাছাকাছি বসিয়ে আলাপ বাড়ানোর প্রয়োজন। সুযোগটা এসেও যায় দিল্লি যাওয়ার সময়ে। মঞ্চের অন্যতম আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ বলেন, ‘‘যাওয়ার পথে রাজধানী এক্সপ্রেসে দু’জনকে পাশাপাশি বসানো হয়েছিল। ট্রেন এবং দিল্লির ময়দান দু’জনকে আরও কাছে এনে দেয়। তবে আন্দোলনের কাজে তাঁদের ফাঁকি ছিল না।’’
এর পরে মঞ্চের উদ্যোগেই দু’জনের বাড়িতে কথা বলা হয়। নদিয়ায় বিয়ে ও বর্ধমানে বৌভাতের আসর বসতে বেশি সময় লাগেনি। ভাস্করের কথায়, ‘‘দু’জনেই মঞ্চের একনিষ্ঠ কর্মী। যখন, যেখানে মিছিলে অংশগ্রহণ করার দরকার পড়েছে, তাঁরা গিয়েছেন।’’ প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘‘সব মিটে গেলে দ্রুত ফিরব মঞ্চে। এই আন্দোলন মঞ্চকে ভুলি কী করে?’’