Cyclone Amphan

নেতার পরিবারের ১০ জন পেলেন ক্ষতিপূরণের টাকা 

ই এলাকায় বহু দরিদ্র মানুষ, যাঁদের আমপানে ঘরবাড়ি ভেঙেছিল, তাঁরা টাকা পাননি বলে অভিযোগ আছে।

Advertisement

দিলীপ নস্কর

সাগর শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২০ ০৫:২৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূল নেতা নিজে তো বটেই, তাঁর স্ত্রী, দুই ছেলে, বৌমা, ভাইপো ও তাঁদের স্ত্রী মিলিয়ে এক পরিবারের ১০ জন আমপান ক্ষতিপূরণের টাকা পেলেন বলে অভিযোগ উঠল। সব মিলিয়ে টাকার অঙ্কে ২ লক্ষ টাকা! তবে তাঁদের মধ্যে সাতজন টাকা ফেরত দিয়েছেন বলে দাবি স্থানীয় বিধায়কের। কম্পিউটার অপারেটরের দোষে এই কাণ্ড বলে দাবি তাঁর।

Advertisement

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগর ব্লকের রুদ্রনগর পঞ্চায়েতের মনসাদ্বীপ গ্রামের তৃণমূল নেতা বিজন জানার ট্রলার আছে। সমৃদ্ধ পরিবার বলে জানেন সকলে। কিন্তু আমপানে বাড়ি ভাঙার ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে স্ত্রী মালতী-সহ পরিবারের ১০ জন টাকা পেয়েছেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় এলাকায় শোরগোল পড়েছে। সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে।

আমপানের ক্ষতিপূরণের তালিকার নাম রয়েছে সাগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবেন্দু মণ্ডলের পরিবারের লোকজনের। এ দিকে, ঝাঁ চকচকে দোতলা বাড়ির মালিক শিবেন্দু।

Advertisement

এই এলাকায় বহু দরিদ্র মানুষ, যাঁদের আমপানে ঘরবাড়ি ভেঙেছিল, তাঁরা টাকা পাননি বলে অভিযোগ আছে।

ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় ছিল ১১ হাজার ৩০০ জনের নাম। বাছাই করে জেলায় নামের তালিকা পাঠানো হয়েছিল হাজার সাতেকের। এখনও পর্যন্ত টাকা ঢুকেছে প্রায় ৬ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের অ্যাকাউন্টে।

এ বিষয়ে সাগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাজেন্দ্রনাথ খাঁড়া বলেন, ‘‘এক পরিবারের এতজনের নামে কী ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকল, তা প্রথম দিকে বুঝতে পারিনি। পরে জানলাম, যাঁরা কম্পিউটারে নামের তালিকা তৈরি করেছেন, তাঁদের ভুলের জন্য এই ঘটনা ঘটেছে।’’

ওই ব্লকের রুদ্রনগর পঞ্চায়েতটি বিধায়ক বঙ্কিম হাজরার খাসতালুক হিসাবে পরিচিত। পঞ্চায়েতের প্রধানও তাঁর স্ত্রী নমিতা। বঙ্কিম বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের নাম ব্লক অফিসে পাঠানোর পরে সেখানে কম্পিউটার ডেটা অপরেটরকে দিয়ে একই পরিবারের ১০ জনের নামের তালিকা করে পাঠানো হয়েছিল। সে কারণে দু’জন কম্পিউটার অপরেটরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, রুদ্রনগর পঞ্চায়েতে মোট ৩১ জন সদস্যের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা ঢুকেছিল। তার মধ্যে এখনও পর্যন্ত ২৮ জন টাকা ফেরত দিয়েছেন।’’

বিধায়কের কথায়, ‘‘বিজন আমাদের দলের একজন কর্মী। সুন্দরবন উন্নয়ন পর্ষদের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছে। ওই পরিবারের ৩ জন ছাড়া বাকি ৭ জন টাকা ফেরত দিয়েছে।’’

বিজেপি নেতা অশোক নায়কের অভিযোগ, শাসক দলের নেতা কর্মী, যাদের দোতলা-তিনতলা পাকা ছাদ দেওয়া বাড়ি রয়েছে, তারা কী ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা পেল, তদন্ত হওয়া উচিত। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত বহু পরিবার এখনও টাকা পায়নি বলেও তাঁর অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘কারা ক্ষতিপূরণ পেয়েছে, সেই তালিকা ব্লকে টাঙানো হয়েছিল। দু’দিন পরে কেন তা খুলে নেওয়া হল? কারা টাকা ফেরত দিয়েছে, সেই নামের তালিকাও টাঙাতে হবে।’’

এ বিষয়ে বিজনের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। সাগরের বিডিও সুদীপ্ত মণ্ডলও ফোন ধরেননি। উত্তর দেননি মেসেজের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement