‘চোখের বালি’ ছবিতে ঐশ্বর্যা রাইয়ের কনেসাজ।
বিয়ের দিন দীপিকা পাডুকনের মতো সেজে উঠবেন না কি প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার মতো, সেই পরিকল্পনা এবং তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় বেশ কয়েক মাস আগে থেকেই। তবে আপনার এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে প্রয়োজন একজন বিশ্বস্ত রূপটান শিল্পীর। যিনি আপনাকে সাজিয়ে তুলবে আপনার মনের মতো করে। ইন্টারনেটে রূপটান শিল্পীর কাজ দেখার পাশাপাশি, আপনি কী ধরনের রূপটান করতে চাইছেন সেটা বেছে নেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই ম্যাট লুক বেশি পছন্দ করেন। আবার অনেকে বিয়ের দিন গ্লসি লুকেই নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চান। তাই পছন্দের সাজের উপর নির্ভর করে রূপটান শিল্পী বাছাইয়ের বিষয়টিও। তবে শুধু দেখনদারিতেই থেমে থাকলে চলবে না। এমনকি, শুধুরূপটান শিল্পীরকাজের ছবি দেখে তাঁকে বিশ্বাস করে নেওয়াটাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। একজন রূপটান শিল্পীকে বাছার আগে কয়েকটি বিষয় আপনার জেনে নেওয়া উচিত।
রূপটান শিল্পী বাছাইয়ের সময় যে প্রশ্নগুলি অবশ্যই করা উচিত
১.বিয়ের নির্ধারিত তারিখে উনি সময় দিতে পারবেন কি না সেটা প্রথম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। প্রধানত বাঙালিদের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ মাস বা সময় অনুযায়ী বিয়ের দিন ঠিক করা হয়। কারণ সেই দিনটিকে বিয়ের জন্য শুভ দিন মনে করা হয়। তাই সেই সব ক্ষেত্রে একই দিনে একাধিক বাড়িতেই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আর সেই মতোই এই দিনগুলিতে রূপটান শিল্পীদের চাহিদাও থাকে বিপুল। রূপটান শিল্পীরবাছাইয়ের ক্ষেত্রে তাই এটিই প্রথম এবং সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
২. চুল এবং রূপটান মিলিয়ে মোট কতটা সময় লাগবে সেটা জেনে নেওয়া সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাড়াহুড়ো না করে, হাতে সময় নিয়ে সাজতে বসাই ওই দিন বুদ্ধিমানের কাজ।
৩. যে রূপটান শিল্পীকে বাছাই করছেন তিনি আগে কনেররূপটান করেছেন তো? এই প্রশ্নটা তাঁকে অবশ্যই করুন। কারণ তাঁর উপরেই নির্ভর করছে আপনার বিয়ের সাজ। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মানুষের কাজের সঙ্গে সদ্য শিখে আসা কাজের ফারাক কিন্তু বিশাল। পাশাপাশি এর আগে তিনি কত জনকে সাজিয়েছেন সেটাও জেনে নেওয়া উচিত।
৪. যে রূপটান শিল্পীকে আপনি দায়িত্ব দেবেন বলে ভেবে রেখেছেন, তাঁর কাছ থেকে প্রথমে জেনে নিন তিনি কী ভাবেনববধূকে সাজিয়েছেন। যদি সম্ভব হয় কয়েকটি ছবিও দেখে নিন।
৫. শুধুমাত্র রূপটান করলেই হয় না। এক একজনের ত্বক এক একরকম। তাই কোন প্রতিষ্ঠানের রূপটান অথবা কী ধরনের রূপটান তিনি ব্যবহার করেন, এছাড়াও আপনার ত্বকের সঙ্গে কী ধরনের রূপটানের পন্য মানাবে, সেটাও জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
৬. আপনার ত্বক এবং মুখের আদলের সঙ্গে কী ধরনের রূপটান মানাবে সেটা জেনে নিন রূপটান শিল্পীদের থেকে। এছাড়া পোশাকের সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখেই রূপটান করা উচিত। বিয়ের দিন অনেকেই খুব ভারীরূপটান পছন্দ করেন না। তাই নিজের পছন্দ-অপছন্দের কথা রূপটান শিল্পীর সঙ্গে আগে ভাগে আলোচনা করে নেওয়াই ভাল।
৭. এখন সাজ-সজ্জা বদলের পাশাপাশি, অনেক নিয়মেও এসেছে পরিবর্তন। এখন বিয়ের কনেদের মন জেতার জন্য রূপটান শিল্পীরা নতুন নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন তার মধ্যে একটি হল বিয়ের সাজ আগেই একবার সাজিয়ে দেখিয়ে নেওয়া। যে রূপটান শিল্পীর তুলির টানে আপনি সেজে উঠবেন ভাবছেন, তিনি বিয়ের আগে আপনার পছন্দসই বিয়ের সাজ সাজিয়ে সেটিকে নির্দিষ্ট করেন কি না, সেটাও জেনে নেওয়া আবশ্যিক। এছাড়াও এই কাজটির জন্য ওঁর পারিশ্রমিক কত তা জেনে নেওয়া উচিত।
৮. বিয়ে মানেই এক বাড়ি লোক। বিয়েতে কনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে চান পরিবারের বাকি সদস্যরাও। কিন্তু অনেক রূপটান শিল্পী রয়েছেন যারা শুধুমাত্র বিয়ের কনেকে সাজিয়েই উধাও হয়ে যান। তাই রূপটান শিল্পী বাছার আগে জেনে নিন যে, তিনি আপনার সঙ্গে আপনার বাড়ির সদস্যদেরও সাজাবে কি না! এবং তার জন্য কত খরচ পড়বে।
বিয়েতে মনের মতো সাজতে কে না চান? কিন্তু সেই সাজ বাস্তবে রূপায়ণের জন্য একটু কসরত তো করতে হবেই। উপরে আলোচিক কিছু নিয়ম মাথায় রেখে যদি আপনি রূপটান শিল্পী বাছেন, তা হলেই কেল্লা ফতে! সকলের নজর থাকবে কেবল আপনার উপরেই।