বিজেপি নেতার সঙ্গে টিনা দাবি। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া।
এক বার নয়, দু’বার নয়, তিন বার নয়। বিজেপি নেতার কাছে সাত সেকেন্ডে পাঁচ পাঁচ বার করজোড়ে মাথা নত করলেন রাজস্থানের বারমেরের জেলাশাসক তথা আইএএস অফিসার সেই টিনা দাবি। সেই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে সারা রাজস্থান তথা দেশ জুড়ে। বিজেপি নেতার প্রতি তরুণী আমলার এই অদ্ভুত আচরণ রাজনীতির আঙিনায় বিতর্কেরও সৃষ্টি করেছে। ঘটনারটির একটি ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সমাজমাধ্যমে ভাইরাল। (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।)
ভাইরাল সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাস্তার ধারে একটি জায়গায় টিনা-সহ সরকারি আধিকারিকেরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এমন সময় রাজস্থান বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা বিজেপি নেতা সতীশ পুনিয়ার গাড়ির কনভয় সেখানে পৌঁছয়। গাড়ি থেকে নেমে আসেন পুনিয়া। আর তাঁকে দেখেই হাত জোড় করে মাথা নত করেন টিনা। এর পর বারে বারে আরও চার বার তিনি পুনিয়ার সামনে করজোড়ে মাথা নত করেন। কিন্তু প্রথম দিকে পুনিয়া তাঁর দিকে তাকানওনি। নিজের ফোন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এর পর টিনার দিকে এক বার তাকিয়ে সংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘ধন্যবাদ। টিনা দাবি ভাল কাজ করছে। সমস্ত জায়গা পরিষ্কার করা হচ্ছে। ডাস্টবিন বসানো হচ্ছে।’’
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘নভো বারমের’ নামে একটি উদ্যোগ শুরু করেছেন টিনা, যার অর্থ নতুন বারমের। এই উদ্যোগের আওতায় নতুন যুগের প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে রাজস্থানের ওই জেলাটিকে। আর সেই উপলক্ষেই আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এসেছিলেন বিজেপি নেতা পুনিয়া। সেখানেই এই ভিডিয়ো ক্যামেরাবন্দি করা হয় বলে খবর।
এক্স হ্যান্ডলে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োটি ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখেছেন। সমালোচনার ঝড় উঠেছে সমাজমাধ্যম জুড়ে। কেউ কেউ আবার প্রশংসাও করেছেন টিনার। এক নেটাগরিক টিনার সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘‘টিনা দাবি যদি জেলাশাসকের পরিবর্তে বিজেপি নেত্রী হতেন তবে আরও ভাল হত। এত মাথা নিচু করা দেখেই স্পষ্ট যে, সরকারের কোনও অংশই কাজ সঠিক ভাবে করতে চায় না।’’ অন্য এক নেটাগরিক আবার টিনার সমর্থনে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘‘বড়দের সম্মান করা খারাপ জিনিস নয়, ভাল জিনিস। এ নিয়ে এত বিতর্কের কী আছে?’’
উল্লেখ্য, টিনাকে ভারতের সবচেয়ে জনপ্রিয় আইএএস অফিসারদের অন্যতম বললে ভুল বলা হবে না। সারা বছর ধরেই তাঁকে নিয়ে কৌতূহল লেগে থাকে। প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন সাধারণ মানুষ। ২০১৫ সালের ইউপিএসসি পরীক্ষায় দেশে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন দিল্লির মেয়ে টিনা। ওই পরীক্ষাতেই দ্বিতীয় স্থানাধিকার করেছিলেন আতহার আমির খান। ২০১৮ সালে টিনা এবং আতহারের বিয়ে হয়। তার দু’বছরের মধ্যেই ২০২০ সালের নভেম্বরে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেন দু’জনেই। ২০২১ সালের অগস্টে টিনা এবং আতহারের বিচ্ছেদ সম্পন্ন হয়। এর পর তিনি বিয়ে করেন সহকর্মী তথা আইএএস অফিসার প্রদীপ গাওয়ান্দেকে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে সন্তানেরও জন্ম দেন টিনা। এর আগে জয়সলমেরের জেলাশাসক ছিলেন। সম্প্রতি বারমেরে বদলি হয়েছে টিনার। সেখানে গিয়েই এ বার বিতর্কে জড়ালেন তিনি।