প্রতিবেদন: প্রচেতা, চিত্রগ্রহণ: সৌরভ, সম্পাদনা: বিজন
সকাল ১০টা ৫৮ মিনিটে নিজাম প্যালেসে ঢুকেছিলেন। বেরোলেন ৯ ঘণ্টা ৩৯ মিনিট বাদে। সিবিআই দফতরের বাইরেই অপেক্ষারত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বললেন, “নির্যাস আস্ত অশ্বডিম্ব।” এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কয়লাকাণ্ডে ইডি-র জেরার সম্মুখীন হয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সে দিনও প্রায় ৭ ঘণ্টা জেরার পর সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে গেটের সামনেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। শনিবার সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদ শেষেও একই ছবি। হাতে মাইক, পাশেই স্পিকার হাতে দাঁড়িয়ে আর এক জন, রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলনের ঢঙে লম্বা বক্তব্য রাখলেন অভিষেক। আবারও অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে। অমিত শাহকে নিশানা করে বললেন, “১৫০ গুণ সম্পত্তি বেড়েছে বলে সুকন্যা মণ্ডল জেলে, আর ১৫০০ গুণ সম্পত্তি বাড়া সত্ত্বেও অমিত শাহের ছেলে জয় শাহ বাইরে!” সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে শুভেন্দু অধিকারী, অধীররঞ্জন চৌধুরী ও সুজন চক্রবর্তীর নাম থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁদের জেরা করা হচ্ছে না, সে প্রশ্নও ছুঁড়ে দিলেন তিনি। নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা করলেন। বললেন, “আমায় জিজ্ঞেস করেছিল, এঁদের চেনেন। বিশ্বাস করবেন না, ৯০ শতাংশের বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর আর মুর্শিদাবাদ। সেখানে দলের তরফে কে দায়িত্বে ছিলেন? তাঁকে জিজ্ঞাসবাদ করা হবে না কেন? আমাদের থেকে যা জানতে চাওয়া হয়, দিয়েছি। অধিকাংশ প্রশ্নই বোগাস।” অভিষেকের দাবি, তৃণমূলের ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির সাফল্যে ভয় পেয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি, আর তাই এ দিনের সিবিআই-তলব। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পুরনো রায় বহাল রেখে বিচারপতি অমৃতা সিন্হা জানিয়ে দেন যে কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘নজিরবিহীন তৎপরতা’ দেখিয়ে অভিষেককে সমন পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বলা হয় শনিবার সকাল ১১টায় নিজাম প্যালেসে হাজিরা দিতে। শুক্রবার রাতে সিবিআইয়ের তলব পেয়ে দু’মাসের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ কর্মসূচিতে কাটছাঁট করে বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় ফিরে আসেন অভিষেক। শনিবার সকালে ১১টা বাজার আগেই সিবিআই দফতরে যান তিনি। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে নিজাম প্যালেস থেকে বেরোনোর সময় অভিষেক বললেন, “পরশু দিন থেকে দশ গুণ বেশি উৎসাহ নিয়ে জনসংযোগ যাত্রা করব।”