প্রতিবেদন: সৌরভ, সম্পাদনা: বিজন
একতারায় টান, বাউলের সুর, পাখিদের কিচিরমিচির আর ছাতিমতলার পাঠশালা— এটাই চিরায়ত বিশ্বভারতী। একটা সময় ছিল, যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতে গড়া এই শিক্ষাঙ্গন ছিল ভ্রমণ পিপাসুদের অন্যতম ঠিকানা। শুধু বাঙালি নয়, বিশ্বের নানা দেশের, নানান প্রান্তের মানুষ বোলপুর আসতেন শুধুমাত্র গুরুদেবের এই আশ্রম দেখবেন বলে। গৌরপ্রাঙ্গন, সিংহসদন বাড়ি, ঘণ্টাতলা, পাঠভবন স্কুল, দিনান্তিকা— ইতিহাস মাখা এই সবকিছুই ছিল আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দু। এখনও তাই আছে। মানুষও আসেন এই সব দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার আশায়। ২০২০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির আগে পর্যন্ত যারা এসেছেন, তাঁরা চর্মচক্ষে সবটাই দেখতে পেয়েছেন। মিহির পাল, হরনাথ ভদ্রের মতো বিশ্বভারতীর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ট্যুর গাইডরাই গোটা বিশ্বভারতী চত্বর ঘুরে দেখাতেন। পারিশ্রামিক হিসাবে নিতেন দু’শো টাকা।
এ সব এখন অতীত। করোনার পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ তিন বছর বিশ্বভারতীর গেটে তালা ঝুলিয়েছে কর্তৃপক্ষ। অবাধ প্রবেশে বাধ সেধেছেন স্বয়ং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। যার খেসারত দিতে হচ্ছে মিহির পাল, হরনাথ ভদ্রদেরই। পেশার টানে যে অন্যত্র চলে যাবেন, তারও উপায় নেই। বয়স আর সেই সাহসও দিচ্ছে না। ১৯৯৭ সাল থেকে এই পেশায় রোজগার। কে জানত, নিয়তি আজ এই পেশাকেই সঙ্কটে ফেলে দেবে?
কর্মহারা ট্যুর গাইডরা চাইছেন, কর্তৃপক্ষ আগের মতোই দ্বার খুলুক। বিশ্বভারতীতে মেলা হোক। আবার শুরু হোক দোল। ফিরে আসুক গৌরব। আর সেটা হলেই বাঁচবে প্রাণ।