প্রতিবেদন: পার্থ প্রতিম
“বাড়িতে আছেন?” প্রশ্ন শুনে প্রায় নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন বয়স্ক ভদ্রমহিলা। গেট বন্ধই রইল। জিজ্ঞাসা করলেন, “কে? দলের লোক? আমরা কিছু জানিনা, আমরা কিছু করিনি, আমাদের মাফ করেন।” সাংবাদিক পরিচয় দেওয়াতে গেটের ও পার থেকে ভেসে এল কণ্ঠস্বর, “দয়া করে কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। পারলে প্রশাসনকে বলে আমাদের একটু সাহায্য করুন। সে দিনের পর থেকে কে কোথায় আছে জানিনা। বউ গর্ভবতী, তাকে এখনও খুঁজে পাইনি।”
জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জুম্মাগছ গ্রাম। শনিবার এই গ্রামের ১৮/১২১ নম্বর বুথে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল এলাকা। অভিযোগ উঠেছিল, পাশের পুকুরে ব্যালট বাক্স ফেলে দেওয়ার। বিরোধী বাম-কংগ্রেস জোটের মারে তাদের সমর্থকেরা আহত হয় বলে দাবি করে তৃণমূল। ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিক্ষোভের মুখে পড়ে জলপাইগুড়ি থানার পুলিশবাহিনী। ভাঙচুর চলে পুলিশের গাড়ি ও একের পর এক বাড়িতে। সোমবার রাজ্যের অন্যান্য জায়গার মতো পুনরায় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় জুম্মাগছ গ্রামেও। এ দিন দফায় দফায় নির্বাচন কমিশনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের আনাগোনা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া পাহারায় আপাতত নির্বিঘ্নেই চলছে ভোটগ্রহণ। কিন্তু জুম্মাগছ ছেড়ে যায়নি আতঙ্ক। বুথ সংলগ্ন একাধিক বাড়ির বাসিন্দা শনিবার থেকেই ঘরছাড়া। যাঁরা রয়ে গেছেন, প্রয়োজন ছাড়া দরজা খুলতে চাইছেন না। চোখে জল নিয়ে ষাটোর্দ্ধ সবিতা খাতুনের জিজ্ঞাসা, “কোথায় যাব একটু বলবেন? কোথায় গেলে সুবিচার পাব? আমরা কোনও দল করিনা, তার পরেও আমাদের উপর অত্যাচার কেন?”