লোকসভা ভোটে বিজেপির ধাক্কা। ৩০৩ থেকে নেমে সোজা ২৪০। ৬৩টি আসনে ভরাডুবি। শরিকি সাহায্য না পেলে সরকারই গড়তে পারবে না বিজেপি। ‘যাদু সংখ্যা’ ২৭২-এ পৌঁছতে বিজেপির প্রয়োজন কম করে ৩২টি আসন। আর এখানেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং নীতীশ কুমারের ভূমিকা। অন্ধ্রপ্রদেশে তেলুগু দেশম পার্টির দখলে লোকসভার ১৬টি আসন। আর বিহারে জনতা দল ইউনাইটেডের দখলে রয়েছে ১২টি আসন। এই ২৮টি আসনই প্রয়োজন বিজেপির। এখনও পর্যন্ত দেশজ রাজনীতির যা হালচাল, তাতে নরেন্দ্র মোদীকে দু’হাত তুলে সমর্থন করবেন দুই ‘বন্ধু’ চন্দ্রবাবু নায়ডু এবং নীতীশ কুমার। অন্তত লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া তেমনই। চন্দ্রবাবু নায়ডু যেমন বলেন, “আমরা এনডিএ শরিক। আমি নিজে নির্বাচন-পরবর্তী বৈঠকে থাকব। যদি কোনও রকম কোনও পরিবর্তন হয়, অবশ্যই জানাব।” দিল্লিতে এনডিএ বৈঠকে যাওয়ার পথে নীতীশ কুমার তাঁর সমর্থন নিয়ে খোলসা করে কিছু না জানালেও, তিনি বলেন, “সরকার তো হবেই...।”
এ দিনই আবার একই বিমানে দিল্লি এসেছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। নীতীশ-সাক্ষাৎ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তেজস্বী বলেন, “ধৈর্য্য ধরুন, দেখতে থাকুন কী-কী হতে চলেছে।” তেজস্বীর এই বক্তব্য শিরোনামে আসতেই শুরু হয়েছে জল্পনা। তাহলে কি আবারও বন্ধু থেকে সম্পর্ক ‘বন্ধুর’ হচ্ছে মোদী-নীতীশের? অতীতে একাধিকবার এই ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বিহার। রাজ্যের সরকারে কখনও বিজেপি, আবার কখনও বিজেপিকে ঠেকাতে আরজেডি’র হাত ধরেছেন নীতীশ। এখন যদিও বিহারে এনডিএ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী তিনি। অতীতে আবার ইন্ডিয়া জোটেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। এ বার দেশের সওয়াল: প্রধানমন্ত্রীর কুর্সির লোভ কি ছাড়তে পারবেন নীতীশ?
অতীতে মোদী-বিরোধী জোটের কাণ্ডারি হিসাবে মুখ্য ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে চন্দ্রবাবু নায়ডুকে। যদিও অন্ধ্রপ্রদেশের বিধানসভায় আবার এনডিএ হয়েই লড়েছে টিডিপি। নীতীশ ‘ডিগবাজি’ খেলে কি ইন্ডিয়ায় সামিল হবেন চন্দ্রবাবুও? সংশয় এবং শঙ্কা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।
সংখ্যাতত্ত্ব অনুযায়ী, এই দুই শরিকের সাহায্য না পেলে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসতে বেগ পেতে হবে বিজেপিকে। এমনকি সর্বশক্তি দিয়ে শিবসেনা এবং লোক জনশক্তি পার্টি সাহায্য করলেও খুব কাছে এসেও থামতে হবে নরেন্দ্র মোদীকে। মুম্বইয়ে একনাথ শিন্ডের শিবসেনা পেয়েছে ৭টি আসন এবং বিহারে চিরাগ পাসওয়ানের পার্টির দখলে গিয়েছে ৫টি আসন। কেবল এই ১২টি আসনের সহায়তায় সরকার গড়তে পারবে না বিজেপি। যদিও বিজেপির দাবি, নীতীশ এ বার ‘ডিগবাজি’ খেতে পারবেন না, তিনি এনডিএ-তেই আছেন।