সম্পাদনা: সৈকত
আর ক্রিকেট দেখতে আসবেন না সাতাশির নওজওয়ান পার্সি আবেসেকেরা। ক্রিকেটের প্রতি, শ্রীলঙ্কার প্রতি অখণ্ড হৃদয় ভালবাসা রেখে না ফেরার দেশে চলে গেলেন ‘আঙ্কল পার্সি’। জীবনের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তীতে এক সাক্ষাৎকারে শ্রীলঙ্কার এই ‘জাবরা ফ্যান’ বলেছিলেন, “১৯৭২ সালে ব্রিটিশ কমনওয়েলথ থেকে বেরিয়ে প্রজাতন্ত্রী হয় শ্রীলঙ্কা। তার আগের ৩০ বছর কোনও পতাকা ছাড়াই শ্রীলঙ্কাকে সমর্থন করেছি। আর বাকি ৩০ বছর দেশের পতাকা ছিল আমার সঙ্গী।”
১৯৭১ সালের ঘটনা। অস্ট্রেলিয়ার অনুর্ধ্ব উনিশ দলের বিরুদ্ধে খেলছে সিলন একাদশ। তখন শ্রীলঙ্কা পরিচিত ছিল সিলন নামেই। ওই ম্যাচে দেশের হার বাঁচাতে আঙ্কেল পার্সি যা করেছিলেন তা এক কথায় বৈপ্লবিক। ‘আঙ্কল পার্সি’ যদিও বলেছিলেন, অর্ধ শতরান করা ক্রিকেটারকে অভ্যর্থনা দিতেই তিনি মাঠে গিয়েছিলন। পরে অবশ্য জানা যায়, খেলার সময় অপচয় করতেই সেদিন মাঠে নেমে পড়েছিলেন তিনি। আর তার এই মাঠে যাওয়ার কারণেই নিশ্চিত হার থেকে বেঁচে যায় দল। যার খেসারতও দিতে হয় তাঁকে। গ্রেফতার হন ‘আঙ্কল পার্সি’। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের জন্য পরে তাঁকে ছাড়িয়ে আনে তৎকালীন ক্রিকেট প্রশাসন। শ্রীলঙ্কা তো বটেই, বিশ্বের যে কোনও ক্রিকেট মাঠেই তিনি স্বাক্ষর রেখেছিলেন নিজস্ব স্লোগানে। বিশ্বকাপের আগে আয়োজিত এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার এই জাবরা সমর্থকের বাড়িতে ঘুরে এসেছিলেন স্বয়ং ভারত অধিনায়ক। রোহিত শর্মার এই অভিব্যক্তিতে খুবই খুশি হয়েছিলেন ‘আঙ্কল পার্সি’।
গত কয়েকদিন কলম্বোর এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার ‘আলবিদা’ বললেন ক্রিকেটের এই সুপারফ্যান। ‘আঙ্কল পার্সি’র মৃত্যুতে শোক গোটা শ্রীলঙ্কায়। এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করে কিংবদন্তি সনৎ জয়সূর্য লিখেছেন, “ব্যথিত হৃদয়ে জানতে পেরেছি আঙ্কল পার্সি তাঁর স্রষ্টার কাছে চলে গেলেন। আপনিই প্রথম সুপারফ্যান এবং আমাদের সবার খুব প্রিয়। রেস্ট ইন পিস।” শোক প্রকাশ করেছেন রাসেল আর্নল্ড, ইরফান পাঠানের মতো ক্রিকেটাররা। ‘আঙ্কল পার্সি’র মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের।