প্রতিবেদন: সৌরভ, চিত্রগ্রহণ: শুভদীপ, সম্পাদনা: বিজন
দুর্গা চাল। সহজ করে বললে প্রতিমার পিছনে থাকা অর্ধচন্দ্রাকৃতি ক্যানভাসে আঁকা চিত্র। আকৃতি অনুযায়ী প্রকারভেদ থাকলেও চালচিত্র মূলত পৌরাণিক গল্পগাথা প্রস্ফুটিত করার মাধ্যম বিশেষ। বাংলায় পটচিত্রের ইতিহাস সুদীর্ঘ। দুর্গা প্রতিমার আচ্ছাদনে পট আঁকার ইতিহাসও সুপ্রাচীন। নবাবি আমল থেকেই বাংলায় চালচিত্রের চল রয়েছে। পালেরাই ছিলেন এই কলাশিল্পের কারিগর। দুর্গা অসুরের যুদ্ধ। কালী। জগদ্ধাত্রী। হরগৌরি। সখী সহযোগে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা- দশকের পর দশক শিল্পীর সূক্ষ্ম তুলির টানে চালচিত্রে ফুটে উঠেছে পুরাণের গল্প। সময়ের বদলে বদল এসেছে এই শিল্পেও। দুর্গা চালে বেড়েছে কলকার ব্যবহার। এখন অনেকেরই নজর কাড়ে মাটির চালচিত্র। সেভাবে দেখলে, সাবেকি প্রতিমা ছাড়া দুর্গা চালের ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। এরপরও জীবিত আছে প্রাচীন এই চিত্রশিল্প। জীবাশ্ম হয়ে যাওয়ার আগে শিল্পকে অক্সিজেন জুগিয়ে যাচ্ছেন কতিপয় শিল্পীরা। তাঁদেরই একজন কৃষ্ণনগরের রেবা পাল। ষোলো বছর বয়সে স্বামীর হাত দিয়ে হাতেখড়ি। আজ আশির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও ভিটে মাটির মতোই তিনি আঁকড়ে রয়েছেন চালচিত্রকে। শিল্পের সঙ্গে শিল্পীর সম্পর্ক ষাট বছর। তবুও ক্লান্তি নেই। বিশ্রাম নেই। পুজো এলেই যেন শরৎ উঁকি দেয়। কাশবনের মতোই তাঁর উঠোন ভরে যায় চালচিত্রে।